আমেরিকা
সৌদি আরবকে গুচ্ছবোমা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

এ বি এন এ : সৌদি আরবকে কোন প্রকার গুচ্ছবোমা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সৌদি সরকার ইয়েমেনের ওপর নির্বিচারে গুচ্ছবোমা হামলা চালাচ্ছে। এর ফলে হতাহতের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সে কারণেই সৌদি আরবের কাছে গুচ্ছবোমা বিক্রি করা হবে না।
যুদ্ধবিরোধী মার্কিন সংগঠনগুলো রবিবার ওবামার এ সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানায়। এ ছাড়া সৌদি আরবের কাছে সব ধরনের অস্ত্র বিক্রিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছে তারা।
ইয়েমেনে ২০১৫ সাল থেকে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত ‘হুথি’ শিয়া গোষ্ঠী। রাজধানীসহ দেশের অর্ধেক জায়গাই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তারা। নিজেদের সমর্থনপুষ্ট ইয়েমেন সরকারকে ক্ষমতায় রাখতেই সেখানে দেদারসে হামলা চালিয়ে আসছে সৌদি বাহিনী।
এ ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসনের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘সৌদি সরকারের সেনাবাহিনীর সামর্থ্য বৃদ্ধির অংশ হিসেবে তাদেরকে মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সৌদি জোট ইয়েমেনের বেসামরিক অঞ্চলে এসব বোমা নির্বিচারে ব্যবহার করায় মার্কিন সরকার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। আর কখনও এ ধরনের বোমা বিক্রি করা হবে না তাদের কাছে।’ তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ফরেন পলিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, গুচ্ছবোমা হামলায় ইয়েমেনে মানবাধিকার কর্মীসহ কয়েকশ’ নারী ও শিশু হত্যার ঘটনাটি সর্বপ্রথম মার্কিন কর্মকর্তাদের নজরে আসে। এর পরেই সৌদি আরবের ব্যাপারে টনক নড়ে যুক্তরাষ্ট্রের। অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, গত এক বছরে সৌদি জোটের হামলায় অন্তত সাড়ে নয় হাজার মানুষ নিহত হয়েছে ইয়েমেনে। হামলায় ব্যবহৃত বোমার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি নিষিদ্ধ গুচ্ছবোমার নমুনা পাওয়া গেছে। সংগঠনটি সম্প্রতি ইয়েমেনের মাটিতে গুচ্ছবোমা নিক্ষেপে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরবকে।
অ্যামেনেস্টির দাবি, জনসাধারণের জন্য ইয়েমেনের মাটি মাইনফিল্ডে পরিণত হচ্ছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য অস্ত্র রফতানিকারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বলে জানিয়েছে এবিএনএ।
বার্তা সংস্থাটি আরও জানায়, আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসারে ২০০৮ সাল থেকে গুচ্ছবোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া এই চুক্তি স্বাক্ষর করেনি। এতদিন ধরে দেশ দুটি তাদের মিত্রদের কাছে এসব মারণাস্ত্র সরবরাহ করে আসছিল। ফরেন পলিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, গত বছরের শেষের দিকে ইয়েমেনে শিয়া বিদ্রোহী এবং সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট দমনের জন্য ১২৯ কোটি ডলারের বোমা কিনেছিল সৌদি আরব। এ ছাড়া নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ এবং সেনাবাহিনী সুসজ্জিত করতে ৫৪০ কোটি ডলারের মার্কিন অস্ত্র ক্রয় করেছিল তারা।
Share this content: