লিড নিউজশিক্ষা

ক্ষমা চাইলেন গভর্নিং বডির সভাপতি, প্রয়োজনে পদত্যাগও

এবিএনএ: রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা-মায়ের কাছে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভিকারুননিসা গভর্নিং বডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়ে এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

তিনি বলেন, আমরা মর্মাহত। আমরা এ ঘটনায় জন্য অরিত্রীর বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমা চাই। প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থে আমার পদত্যাগের প্রয়োজন হলে আমি করব। এর আগে সকালেই প্রতিষ্ঠানটির মূল ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা গভর্নিং কমিটির সদস্যদের পদত্যাগ এবং অরিত্রীর বাবা-মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য তাদের কাছে কর্তৃপক্ষের প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানায়। গত রোববার পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল অরিত্রি অধিকারী (১৫)। ফোনে নকল থাকার অভিযোগ তুলে তাকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে তারা স্কুলে যান এবং মেয়ের হয়ে দফায় দফায় ক্ষমা চান। কিন্তু এরপরও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাদের অপমান করেন এবং স্কুল থেকে অরিত্রি অধিকারীকে ছাড়পত্র দেওয়ার ঘোষণা দেন। নিজের সামনে বাবা-মায়ের এমন অপমান সইতে না পেরে ওইদিন দুপুরে শান্তিনগরের বাসায় ফিরে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠে বেইলি রোডে ভিকারুননিসার ক্যাম্পাস।

মঙ্গলবার রাতে অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনায় পল্টন থানায় ওই মামলা করেন তার বাবা। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে হওয়া মামলায় শিক্ষা ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আরা এবং হাসনা হেনাকে আসামি করা হয়। বুধবারও চলে আন্দোলন। এসময় অধ্যক্ষের পদত্যাগ ও তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচণার দায়ে শাস্তিসহ ছয় দফা দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। বিকেলে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেয় তারা। পরে সন্ধ্যায় ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির এক জরুরি সভায় ওই তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়। এদিন দুপুরে অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনায় গঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সারাংশ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এতে বলা হয়, অভিযুক্তরা মানসিকভাবে অরিত্রিকে বিপর্যস্ত করে তোলে এবং তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে। এ জন্য কমিটি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছে।বুধবার রাতেই রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতার করা হয় শিক্ষক হাসনা হেনাকে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থী তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ শুরু করে।

Share this content:

Related Articles

Back to top button