আমেরিকালিড নিউজ

সেন্সরের মাধ্যমে ট্রাম্পের উপর নজর রাখে সিক্রেট সার্ভিস

এবিএনএ : আমেরিকার সিক্রেট সার্ভিস নিয়ে সবসময় আগ্রহ থাকে তুঙ্গে। হলিউড ছবিতে যেমন দেখা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের আশপাশেও তেমন নিরাপত্তা চোখে পড়ে। কালো টাক্সেটো, নিখুঁত সানগ্লাস, কানে ইয়ারপিস, লাক্সারি গাড়ি নিয়ে সবসময় থাকে সিক্রেট এজেন্টরা।

সিক্রেট সার্ভিস আসলে দুই ধরনের মিশনের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। একটি তদন্তকারী, অন্যটি প্রতিরক্ষামূলক।

১) শুধু বর্তমান প্রেসিডেন্টকে নিরাপত্তা দেওয়া সিক্রেট সার্ভিসের কাজ থাকে না। বর্তমান প্রেসিডেন্টের পরিবার, তার অতিথি, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও তাদের পরিবারকেও নিরাপত্তা দেয় এরা। সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট যাদের চায়, তাদেরও নিরাপত্তা দেওয়ার কাজ করে সিক্রেট সার্ভিস।

২) প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করার জন্যই শুধু গঠিত হয়নি এজেন্সি। সিক্রেট সার্ভিস তৈরির মূল লক্ষ্য জালিয়াত ও অর্থনৈতিক প্রতারকদের মোকাবিলা করা।

৩) সাধারণ মানুষ যা ভাবে, তার চেয়ে অনেক বেশি কাজ করে এই নিরাপত্তা কর্মীরা।

পার্সোনাল প্রোটেকশন ইউনিটের মধ্যে বাছাই করা কর্মীর সংখ্যা ৬ হাজার ৫০০ জন।

৪) প্রেসিডেন্টের জন্য জীবন উৎসর্গ করার কোনও শপথ এরা নেয় না। যদি কোনও এজেন্ট প্রেসিডেন্টকে বাঁচাতে গিয়ে মারা যান, সেটা সম্পূর্ণভাবে স্বেচ্ছাকৃত বলে ধরে নেওয়া হয়। ইতিহাসে একমাত্র একজনই এমন অফিসার আছেন। তাঁর নাম লেসলি কফিলেট। প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যানকে বাঁচাতে গিয়ে মারা যান তিনি।

৫) প্রথমেই কিন্তু সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা ফিল্ড মিশনের জন্য আসতে পারে না। প্রথমে তাদের ডেস্কে চাকরি করতে হয়। অন্তত ৩ বছর চাকরি করার পর ফিল্ড মিশনের কথা ভাবতে হয় তাদের। ডেস্কের চাকরি ৪ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত চলতে পারে। তারপর যদি ফিল্ড মিশনের জন্য কেউ উত্তীর্ণ হয়, তবেই তিনি ফিল্ডে যেতে পারেন। নাহলে তাকে অফিসেই কাজ করতে হয়।

৬) বুলেট, পানি সহ সবকিছু নিয়ে অনুশীলন করতে হয় তাদের। যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ মিশনের আগে তাদের এই অনুশীলন করতে হয়। প্রতি ৮ সপ্তাহ অন্তর তাদের স্কিল ডেভলপমেন্ট কোর্সের মাধ্যমে প্রতিটি পরিস্থিতির মোকাবিলা করার চর্চা করা হয়।

৭) প্রত্যেক এজেন্টের মেডিক্যাল নিয়ে সর্বনিম্ন জ্ঞান থাকা জরুরি। মুশকিল পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য তাদের এই শিক্ষা প্রয়োজনীয়। দরকার পড়লে যাতে রক্ত দেওয়া যায়, তার জন্য তারা প্রেসিডেন্টের জন্য সবসময় অতিরিক্ত রক্ত সঙ্গে রাখে।

৮) প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের জন্য একই অক্ষরের কোড দেওয়া হয়। যেমন, বারাক ওবামার কোড নেম ছিল রেনেগেড। তাঁর স্ত্রীয়ের ছিল রেনাইসান্যান্স। দুই মেয়ের নাম ছিল ব়্যডিয়্যান্স ও রোজবার্ড।

৯) যদি কখনও প্রেসিডেন্ট তাঁর ওভাল অফিসে একা থাকতে চান, থাকতে পারেন। কিন্তু তখনও সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা তাঁর উপর নজর রাখেন। প্রেসিডেন্টের সমস্ত মুহূর্তের খবরাখবর তাঁরা সেন্সারের মাধ্যমে নজর রাখেন।

১০) প্রেসিডেন্ট যেখানেই যান, এজেন্টরা তাঁকে ফলো করেন। এটাই নিয়ম। প্রেসিডেন্টের যাবতীয় কাজ, শখ মেটানোর সময়ও উপস্থিত থাকেন সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা।

১১) ওয়াশিংটনের এইচ স্ট্রিটে আছে সিক্রেট সার্ভিসের হেডকোয়ার্টার।

১২) ১৪ এপ্রিল, ১৮৬৫ সালে হিউগ ম্যাককালোচ সিক্রেট সার্ভিসের প্রতিষ্ঠা করেন। ওইদিনই মারা যান আব্রাহাম লিঙ্কন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button