বাংলাদেশরাজনীতিলিড নিউজ

সেই রনিকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি

এবিএনএ : চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনিকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য বৃহস্পতিবার রাতে রনিকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। রনির অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।

২০১৩ সালের অক্টোবরে ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন নুরুল আজিম রনি। আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবেই এ পদ পান তিনি। যদিও এর আগে ছাত্রলীগের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবিতে রনি ছিলেন না। সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়ার পর থেকেই তিনি একের পর এক অঘটন ঘটানো শুরু করেন। তার অপকর্ম পুরো সংগঠনের কার্যক্রমকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। হাটহাজারীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কেন্দ্র দখল ও প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে অস্ত্রসহ ধরা পড়েন রনি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে সাজা প্রদান করেন।

অতিরিক্ত ফি আদায়ের প্রতিবাদে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের নেয়া সুইমিং পুল নির্মাণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে অবস্থানসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে রনি অংশ নেন। এতে নগর ছাত্রলীগের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। চট্টগ্রামের ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন কোচিং সেন্টারের পরিচালক মো. রাশেদ মিয়াকে মারধর করেন রনি। গত ১৭ ফেব্রুয়ারির ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পাঁচলাইশ থানায় চাঁদাবাজি ও মারধরের এ অভিযোগ করেন ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন কোচিং সেন্টারের পরিচালক মো. রাশেদ মিয়া। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে রাশেদ মিয়াকে মারধর করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আজ সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নুরুল আজিম রনি জানান, ব্যক্তিগত কারণে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। এর আগে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনায় আলোচনায় আসেন নুরুল আজিম রনি। সে সময় চকবাজার থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন কলেজটির অধ্যক্ষ জাহেদ খান। অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন মাহামুদ জানান, কোচিং সেন্টারের পরিচালক অভিযোগ করেছেন। তারা এখন ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন।

ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন কোচিং সেন্টারের পরিচালক মো. রাশেদ মিয়া জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নুরুল আজিম রনি জিইসি মোড় এলাকায় তার অফিসে গিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এত টাকা কোথা থেকে দেব প্রশ্ন করলে রনি তাকে বেধড়ক মারতে থাকেন। এ সময় পুরো দৃশ্য ওই কক্ষে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি টিভি) ক্যামেরায় ধরা পড়ে। ছয় মিনিটের ওই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এর আগে গত ১৪ এপ্রিল মুরাদপুর থেকে রনি ও তাঁর সহযোগী নোমান চৌধুরী, রাকিবসহ সাত-আটজন রাশেদকে মোহাম্মদপুর মাজারের সামনে থেকে ধরে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ করেন রাশেদ মিয়া।

সেখান থেকে রনির অফিস বুড়ি পুকুরপাড়ের অ্যালুমিনিয়াম গলিতে নিয়ে চাঁদার জন্য রাশেদকে পেটানো হয়। এ সময় রনির সহযোগীরা রাশেদকে হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন বলেও তার দাবি। রাশেদ বলেন, রনি তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ২০ লাখ টাকা না দিলে তোকে জানে মেরে ফেলবো। এমনকি রাশেদ মিয়া ও তার স্ত্রীর পাসপোর্টও রনি তার কাছে জমা রাখার নির্দেশ দেন। পরে বাসা থেকে ৩৫ হাজার টাকাসহ পাসপোর্ট দুটি জমা দেয়ার পর ছাড়া পান রাশেদ।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button