বাংলাদেশরাজনীতিলিড নিউজ

সুন্দরবনের ক্ষতি হলে বিচার হবে একশ বছর পরেও

এ বি এন এ : বাগেরহাটের রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের ক্ষতি হলে একশ বছর পরে হলেও এই কেন্দ্রের পক্ষের লোকদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে বলে হুশিয়ার করা হয়েছে একটি সেমিনারে।  এই প্রকল্পটি সুন্দরবনের ক্ষতি করবে দাবি করে অন্য কোথাও কেন্দ্রটি সরিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেছেন আলোচকরা।
শুক্রবার রাজধানীতে ‘রামপাল  তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের প্রয়োজনীয়তা: হুমকির মুখে সুন্দরবন’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এ কথা বলেন। বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের সংগঠন শত নাগরিক জাতীয় কমিটি। এতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজ উদ্দিন আহমদ, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রপতি চিকিৎসক বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘একশ বছর পরে হলেও অন্যায়ের বিচার হয়, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। রামপালের কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রর জন্য দেশের  ও সুন্দরবনের  যে ক্ষতি হবে তার জন্যও একদিন তাদেরকে (বর্তমান সরকার) কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে।’
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আশেপোশে এমন অনেক লোক তৈরি হয়েছে যাদের কারণে মঙ্গল বাক্যটি তার কান পর্যন্ত পৌছাতে পারছে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি বিনীতভাবে প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, আপনি চাইলেই এই প্রকল্পটি বন্ধ করতে পারেন। কিন্তু স্বার্থপর ও দুর্নীতিপরায়ণ লোকের জন্য তিনি এই কথাগুলো শুনতে পারছেন না।’
বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘গত কয়েক বছরে ভারতে এ ধরনের দুটি প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, শ্রীলংকাতেও এ ধরনের একটি প্রকল্প বন্ধ করা হয়েছে। তাহলে কেন আমাদের দেশে একই ধরনের প্রকল্প করা হচ্ছে? ভারত সরকার নিজের দেশে যে প্রকল্পটি বাতিল করেছে ঠিক সে ধরনের একটি প্রকল্প করতে আমাদেরকেই বা কেন সহযোগিতা করছে?’
এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা সরকারের বিরোধীতা করার জন্য কথা গুলো বলছি না। কারণ, সুন্দরবন ধ্বংস হোক এটি কেউ চায় না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও চান না। এটি কোন দলীয় ব্যপার না, এটি একটি জাতীয় স্বার্থ। তাই জাতীয় ম্বার্থে সবাইকে এক হয়ে কথাগুলো বলা উচিত।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বলেন, ‘এক সময় সুন্দরবনের আয়তন ছিল ১৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার, এখন তা এসে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটারে। এই ক্রান্তিকালে আমাদের দেশে সুন্দরবনকে ধ্বংস করার যে পরিকল্পনা করা হচ্ছে তা দুঃখজনক। হাজার প্রজাতির প্রাণী আর উদ্ভিদে সমৃদ্ধ সুন্দরবন আমাদের দেশের প্রহরী। ঝড় বন্যা জলোচ্ছ্বাসের মতো বড় বড় প্রকৃতিক দুর্যোগ থেকে এই বন আমাদের দেশের বড় একটি অংশকে রক্ষা করেছে।’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রীকে বলব বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে আমাদের আপত্তি নেই, কিন্তু সেটা রামপালে নয়, অন্য কোথাও করুন।’ তিনি বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের দরকার আছে, সুন্দরবনেরও প্রয়োজন আছে।’

Share this content:

Back to top button