ফ্লোরেন্স পিউ: হলিউডে ঝলমলে আলোয় জ্বলে ওঠা এক সাহসী নারীর গল্প
নিজেকে কখনোই বদলাননি, সমাজের চোখে নয়—নিজস্ব শক্তিতেই হলিউডে জায়গা করে নিয়েছেন ফ্লোরেন্স পিউ


এবিএনএ: ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড শহরের এক ঘরোয়া পরিবেশ থেকে উঠে আসা এক কিশোরী আজ হলিউডের আলো ঝলমলে মঞ্চে নিজের অসাধারণ উপস্থিতি দিয়ে দর্শক হৃদয় জয় করে চলেছেন। তিনি ফ্লোরেন্স পিউ—একজন এমন অভিনেত্রী, যিনি কেবল নিজের অভিনয় প্রতিভা দিয়ে নয়, নিজের বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গিতেও অনন্য।
২০১৪ সালে ‘দ্য ফলিং’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন ফ্লোরেন্স। কিন্তু প্রকৃত পরিচিতি আসে ২০১৬ সালে ‘লেডি ম্যাকবেথ’ সিনেমার মাধ্যমে। নিঃস্ব ও বিদ্রোহী নারীর চরিত্রে তিনি নিজেকে যেভাবে মেলে ধরেছিলেন, তাতে গোটা বিশ্ব তাক লাগিয়ে যায়। এই সিনেমার জন্য ব্রিটিশ ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড জিতে নেন তিনি।
এরপর একের পর এক সিনেমা ও টিভি সিরিজে অভিনয় করে নিজেকে তুলে ধরেন একজন গুণী শিল্পী হিসেবে। ‘কিং লিয়ার’, ‘দ্য লিটল ড্রামার গার্ল’ এবং ২০১৯ সালের ‘ফাইটিং উইথ মাই ফ্যামিলি’, ‘মিডসোমার’ ও ‘লিটল ওম্যান’—প্রতিটি সিনেমায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেন। ‘লিটল ওম্যান’-এর ‘এমি মার্চ’ চরিত্রের জন্য পান অস্কার মনোনয়ন।
মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সে ‘ব্ল্যাক উইডো’ সিনেমায় ‘ইলেনা’ চরিত্রে তাঁর অভিনয় তাঁকে আরও বড় পরিসরে পরিচিত করে তোলে। তাঁর সংলাপে ছিল বুদ্ধিদীপ্ত রসবোধ, আর চোখে চোখে ছিল জীবনের গভীরতা।
ফ্লোরেন্স পিউ নিজের শরীর ও বিশ্বাস নিয়ে কখনো আপস করেননি। যখন সামাজিক মাধ্যমে তাঁর দেহ নিয়ে সমালোচনা হয়, তখন তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন,
“আমি যেমন, তেমনই সুন্দর। দেখার ইচ্ছা থাকলে দেখো, না থাকলে চোখ ফিরিয়ে নাও।”
এমন আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠ, এমন দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে কেবল একজন অভিনেত্রী নয়, বরং আজকের প্রজন্মের নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণায় পরিণত করেছে।
সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত নতুন ছবি ‘থান্ডারবোল্টস’। আগের চেয়ে আরও পরিণত, আরও অভিজ্ঞ তিনি। অভিনয় তাঁর কাছে কেবল ক্যারিয়ার নয়, এটি তাঁর আত্মার প্রকাশ।
২৯ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর পথচলা এখনো অনেক বাকি। তবে যা অর্জন করেছেন, তাতে তিনি হলিউডে নতুন যুগের প্রতীক হয়ে উঠেছেন—সাহস, শিল্প ও সত্যিকারের নারীত্বের প্রতিনিধিত্ব করে।
Share this content: