
এবিএনএ : কারা রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমকে এতদূর আসতে সহায়তা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বলেছেন, এই সমস্ত ভুয়া লোক (সাহেদ) কীভাবে সরকারের সঙ্গে কাজ করে কিংবা ‘সরকার স্বীকৃতি’ দেয় তা আমরা খতিয়ে দেখছি। বিষয়টি খুব সিরিয়াসলি নিয়েছি। রবিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) অডিটোরিয়ামে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
করোনার এই মহামারির সময় রিজেন্ট হাসপাতাল করোনা টেস্ট না করে ফলাফল দিত। এছাড়া করোনা টেস্টের জন্য চার হাজার করে টাকাও নিতেন সাহেদ। এভাবে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়েছেন। গত ৬ জুলাই উত্তরা ও মিরপুরে রিজেন্ট হাসপাতালে গিয়ে এসব অনিয়ম পাওয়া যায়। এরপর থেকে সাহেদ পলাতক ছিলেন। বুধবার ভারতে পালিয়ে যাবার সময় র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, সাহেদ করিম একজন বড় মাপের প্রতারক। তার বিরুদ্ধে ৫৭টির বেশি মামলা আছে। এছাড়া গতকাল পর্যন্ত র্যাবের কাছে প্রায় শতাধিক অভিযোগ পড়েছে। সাহেদ কখন নিজেকে সেনা কর্মকর্তা, আবার কখনও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিতেন। আর এসব পুঁজি করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে অনেকেরই মনেই প্রশ্ন আসছে এই সমস্ত ভুয়া লোক কিভাবে সরকারের সঙ্গে কাজ করে কিংবা সরকার স্বীকৃতি দেয়। সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। যদিও, আপনাদের অনেকের মনেই সন্দেহ আছে, সেগুলো আমরা খুব সিরিয়াসলি নিয়েছি। কারা কারা এদের সঙ্গে জড়িত ছিল, কাদের সহযোগিতায় এই জায়গায় এসেছেন সবই আমরা তদন্ত করছি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যা যা করা দরকার তার সবগুলোই করেছেন- বলেন মন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সংবাদপত্রের ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করলে সবাইকে তা দেয়া হয় না। বিচার বিবেচনা করেই হাতে গোনা কয়েকজনকে দেওয়া হয়। তারপরেও আজ পর্যন্ত কয়েক হাজার সংবাদপত্রের অনুমোদন হয়েছে, এটা সত্য।’ ‘অনেকেই সংবাদপত্রকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। সেখানেও আপনাদের (সাংবাদিকদের) চিহ্নিত করে দেয়া দরকার, যাতে করে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি।’
সাংবাদিকদের বেতনের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন মফস্বলে যাই তখন সাংবাদিকদের অবস্থার যে দুরাবস্থাটা দেখি, সেই অভিজ্ঞতাও আমার আছে। একটা আইডি কার্ড সাংবাদিক ভাইদেরকে দিয়ে বলে, বেতন আজীবনই বাকি।’ তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস শুরু থেকেই দেশের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ সাংবাদিকদের মাঝে কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠান। অনুরূপভাবে সেটিও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
অনুষ্ঠানে করোনাকালে বেকার সাংবাদিকদের আর্থিক সহায়তা করা হয়। এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব শাবান মাহমুদ প্রমুখ।
Share this content: