জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

এবিএনএ : কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রংপুর, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ, নলিতাবাড়িসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে যাদুকাটা, পাঠলাই, বৌলাই, সুরমাসহ বিভিন্ন নদীর পানি ফুলে উঠছে। প্রবল বর্ষণ আর উজান থেকে পাহাড়ী ঢলে বিভিন্ন নদ নদীর পানি বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে গত তিনদিন ধরে তাহিরপুর সদর থেকে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্ধ রয়েছে উপজেলার শতাধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রাথমিকের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা ইতিমধ্যে স্থগিত ঘোষনা করা হয়েছে।
নওগাঁর মান্দা উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই নদীর পানি গতকাল শনিবার বিপদ সীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন র্বোড সুত্রে জানা গেছে। আত্রাই নদীর উপজেলার কশব ইউনিয়নের পাজরভাঙ্গা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে ২৭৫টি পরিবার পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া দক্ষিণ চকবালু হিন্দুপাড়া নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেলে ৫০-৬০টি বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় পাঁচ শতাধিক বিঘা জমির আমন ধানসহ অন্যান্য ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বর্তমানে অসহায় পরিবারগুলো বিশ্ববাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন সরকারী সাহায্য বা ত্রাণ তাদের কাছে না পৌছায় মানবেতন জীবন যাপন করছেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালি নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে। নালিতাবাড়ীতে গত ২ দিনে  ভোগাই নদীর, নয়াবিল, শিমুলতলা, পৌরবাসষ্ট্যান্ড, নীচপাড়া, খালভাংগা, নিজপাড়া এলাকার কমপক্ষে ১১ জায়গায় নদীতীর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা, সদ্য রোপণকৃত আমনের ক্ষেত, শাকসবজি এবং শতাধিক পুকুর। এদিকে গোল্লাপাড়, শিমুলতলা, হাতিপাগার , নয়াবিল, খালভাংগা ও শিমুলতলা এলাকায় বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢলের পানিতে নয়াবিল বাজার, নয়াবিল ইউপি পরিষদ, নয়াবিল উচ্চ বিদ্যালয়, নয়াবিল বালিকা বিদ্যালয়সহ আশ-পাশের বাড়িঘরে কোমর পানি উঠেছে। সাথে শিমুলতলা ও বাগানবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় ওই সব বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রয়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে কুড়িগ্রাম উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের ধরলার তীরবর্তী কালুয়া ও বাংটুর ঘাট বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় তিন হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। অপরদিকে তিস্তা নদীর পানিও বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলো ডুবে যাওয়ায় চরের প্রায় ২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ভারতের গজল ডোবা থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি আর ৫দিনের টানা ভারী বর্ষনে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ধান ক্ষেত আর কয়েকশ মৎস্য খামার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তিস্তার পানি আর বৃষ্টির পানিতে উপজেলার পূর্ব নিজপাড়া, তালুকসাবাজ, হরিচরনলস্কর, গনাই, রাজিব, বিনোদমাঝি, হয়বতখা, বিশ্বনাথ, ঢুষমারা, গদাই, পাঞ্জরভাঙ্গা, প্রাণনাথ, নাজিরদহ, পল্লীমারী এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

Share this content:

Back to top button