

এবিএনএ: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্রামীণ অর্থনীতি তথা কৃষি অর্থনীতির বিকাশ অপরিহার্য। মাটি ও মানুষের উন্নয়নের এর বিকল্প নেই। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ), বগুড়া এবং লিমরা ট্রেড ফেয়ারস অ্যান্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেড আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘৯ম আন্তর্জাতিক কৃষি প্রযুক্তি মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশজ আয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান কিছুটা কম হলেও দেশের শ্রমশক্তির প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী কৃষির সঙ্গে জড়িত। এ কারণে কৃষিকে কোনোক্রমেই অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে অবহেলা করার সুযোগ নেই, বরং অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের সংকটের আশঙ্কা থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য ও দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ধরে রাখার লক্ষ্যে কৃষি খাতের ওপর সরকার আরো জোর দিচ্ছে। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. কামাল উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লিমরা ট্রেড ফেয়ারস অ্যান্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক কাজী সারোয়ার উদ্দিন।
মন্ত্রী বলেন, আধুনিক বিশ্বে কৃষির সকল স্তরে উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগার পাশাপাশি এ দেশের কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির আশানুরূপ পরিবর্তন লক্ষ্যনীয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কৃষি ও ভাগ্যাহত কৃষককূলের উন্নয়নে বাস্তবায়িত হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। প্রচলিত সনাতন ধারার পরিবর্তে খামার যান্ত্রিকীকরণেও আমরা এগিয়েছি। পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ও কলাকৌশলের আরো সমন্বয় সাধন প্রয়োজন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের ফলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং তা কৃষিক্ষেত্র ছাড়াও দেশের সামগ্রীক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাজুল ইসলাম বলেন, কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। গ্রামে ভবন নির্মাণ করে কৃষি জমির ওপর চাপ কমাতে হবে। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বাড়াতে হবে। তিনি গ্রামীণ অঞ্চলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি কৃষি জমিতে আইল তুলে দিয়ে সমবায় পদ্ধতি ব্যবহার করে চাষাবাদ করারও আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর দেশের সংকটকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি উন্নয়নে যে রূপরেখা প্রদান করেছিলেন পরবর্তীতে তা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়েছিল। তিনি বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, ফসলের নিবিড়তা বাড়াতে সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি উৎপাদক, প্রযুক্তি সম্প্রসারণকারী শিল্প ও প্রতিষ্ঠাসমূহের অবদানের প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আরডিএ, বগুড়ার মহাপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম। পরে মন্ত্রী মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল ঘুরে দেখেন। উল্লেখ্য, মেলায় ১৬টি দেশের প্রায় ৬৮৮টি স্টল রয়েছে।