জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

করোনায় ২৪ ঘণ্টায় ২২ মৃত্যু, শনাক্ত ১৫৪১

এবিএনএ : দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এতে মোট ৫৪৪ জন মারা গেলেন করোনায়। একই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৫৪১ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ৩৮ হাজার ২৯২।

বুধবার (২৭ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। বুলেটিন পড়েন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

বুলেটিনে বলা হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজার ৮৪৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের কিছু মিলিয়ে আট হাজার ১৫টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো দুই লাখ ৬৬ হাজার ৪৫৬টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও এক হাজার ৫৪১ জনের দেহে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ২৯২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ২২ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৩৪৬ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল সাত হাজার ৯২৫ জনে।

নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ২০ জন পুরুষ, দুজন নারী। ২১ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, একজন মারা গেছেন বাসায়। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১০ জন এবং সি‌লেট বিভাগের দুজন বাসিন্দা রয়েছেন। জেলাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাজধানীতে পাঁচজন, ঢাকা জেলায় তিনজন, মুন্সীগঞ্জে একজন, নরসিংদীতে একজন, চট্টগ্রামে দুজন, নোয়াখালীতে তিনজন, কুমিল্লায় দুজন, কক্সবাজারে একজন, চাঁদপুরে দুজন, সিলেটে একজন এবং মৌলভীবাজারে একজন মারা গেছেন। বয়সের দিক থেকে ০ থেকে ১০ বছর বয়সের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী দুজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুজন, চল্লিশোর্ধ্ব দুজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব সাতজন, ষাটোর্ধ্ব সাতজন এবং সত্তরোর্ধ্ব একজনের মৃত্যু হয়েছে।

গত মঙ্গলবারের (২৬ মে) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন মারা গেছেন। পাঁচ হাজার ৪০৭টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ১৬৬ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় যেমন মৃত্যুও বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে শনাক্ত রোগীও। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ২৮ জনের। এ তথ্য জানানো হয় গত ২২ মে’র বুলেটিনে। আর সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে এক হাজার ৯৭৫ জনের, যা জানানো হয় গত ২৫ মে’র বুলেটিনে।

বুধবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ২২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৭৮৯ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ৭১ হাজার ১০৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৮২ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ১৪ হাজার ৪০৮ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৬ হাজার ৬৯৬ জন।

দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৬টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে।

বরাবরের মতোই ডা. নাসিমা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানা বুলেটিনে।

চীনের উহান শহর থেকে গত ডিসেম্বরে ছড়ানো করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৫৭ লাখ মানুষ। মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ৫২ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে সাড়ে ২৪ লাখের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button