
এবিএনএ : দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে কারাগারে থাকা দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে নয়াপল্টনের কার্যালয়ে সামনে জড়ো হওয়া নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এতে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনসহ দলটির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন বেশ কয়েকজন। শনিবার সকাল ১১টার আগে কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচির কিছু আগে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাদিয়া পাঠান পাপন ঢাকাটাইমসকে জানান, কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি পালনের জন্য সকাল ১০টার পর মহিলা দল ও ছাত্রদলের নারী কর্মীসহ নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। তারা কার্যালয়ের সামনে সড়কে কালো পতাকা নিয়ে বসে পড়েন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
পরে বিএনপিকর্মীরা সড়কে অবস্থান নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ, জলকামান থেকে রঙিন পানিও ছুড়তে থাকে। এতে মির্জা ফখরুলসহ দলটির অনেক নেতাকর্মী ভিজে যান। এ সময় পুলিশ নেতাকর্মীদের বেধড়ক পেটান বলে অভিযোগ করেন নাদিয়া। এছাড়া ১০-১২ জন নারী কর্মীসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি। রঙিন পানিতে ভেজার পর বিএনপি মহাসচিবসহ অন্য নেতারা দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন। ভেতর থেকে স্লোগান দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামির ১০ বছরের কারাদণ্ড ও দুই কোটি ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করে আদালত। রায়ে পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আট দিন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। রাজধানীতে মিছিল, মানববন্ধন, অবস্থান, অনশনের মতো কর্মসূচি নির্বিঘ্নেই পালন করে দলটি। তবে ২২ ফেব্রুয়ারি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েও সেই কর্মসূচি পালন করতে পারেনি পুলিশের অনুমতি না মেলায়। আর এর প্রতিক্রিয়ায় আজ কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দেয় বিএনপি।
গতকাল রাজধানীতে এক আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছিলেন, সরকার কোনো সংগঠনের রাজনৈতিক অধিকারে বাধা দিচ্ছে না। পেট্রলবোমা মেরে জ্বালাও-পোড়াওয়ের মতো সহিংস ও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি থেকে সরে এসে সুষ্ঠু রাজনৈতিক আন্দোলন করলে বিএনপিকে সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছিলেন মন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘নিয়ম মেনে গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন করলে বিএনপির কোনো কর্মসূচিতেই বাধা দেয়া হবে না।’ আজকের বিএনপির কর্মসূচিতে লাঠিপেটা করার বিষয়ে জানতে চাইলে পল্টন মডেল থানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শিবলি নোমান জানান, ‘ভাই এখন ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলব।’ এ কথা বলেই তিনি ফোন কেটে দেন। পরে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের শিবলী নোমান জানান, ‘সড়ক দখল করে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হতে পারে না। তাই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’ কর্মসূচি পণ্ড করে দেয়ার পর নয়াপল্টনের আশপাশের গলিগুলোতে অভিযান চালিয়ে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
Share this content: