
এবিএনএ : জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে যোগ দিতে গুলশানের বাসা থেকে বের হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন।আজ রবিবার দুপুর ২টার পর গুলশানের ‘ফিরোজা’ বাসা থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে রওনা দেয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান।
এদিকে রবিবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির সমাবেশ শুরু হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সীমানার পশ্চিম পাশের প্রাচীর ঘেঁষা তৈরি করনা হয়েছে সমাবেশের মঞ্চ। মঞ্চের চারপাশে অসংখ্য ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।প্রায় দেড় বছর পর প্রকাশ্য সমাবেশে খালেদা জিয়ার এ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেছেন, এই সমাবেশে খালেদা জিয়া গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা দেবেন।দীর্ঘদিন পর রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতি পেয়ে উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করছেন। আশপাশের পুরো এলাকা জুড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। ফলে শাহবাগ থেকে মৎস্যভবন পর্যন্ত যানবাহনের ধীর গতি দেখা গেছে। তবে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে হঠাৎ করেই গণপরিবহন চলাচল কমে যাওয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। তারপরও সমাবেশ সফল করতে সকাল থেকেই আসতে শুরু করেছেন দলের নেতাকর্মীরা।রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির আহমেদ রিজভী অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশকে পন্ড করতে সরকার আশপাশের জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকামুখী গণপরিবহন বন্ধ করে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তাতে কোনো কাজ হবে না। বিএনপির সমাবেশমুখ জনস্রোত ঠেকাতে পারবে না সরকার।দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন আগামী জাতীয় নির্বাচন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, গণতন্ত্রহীনতা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ সাধারণ মানুষের সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে ভাষণ দেবেন।শনিবার সকালে ২৩টি শর্ত সাপেক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে বিএনপিকে অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এর পরপরই নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। রবিবার বিকাল ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে- এটা অন্যতম প্রধান শর্ত। এছাড়া সমাবেশ স্থল ও এর আশপাশে বিএনপিকেই তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে বলেছে ডিএমপি। সমাবেশের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের করাও অন্যতম প্রধান শর্ত। বিএনপির নেতা-কর্মীদেরকে মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানে না আসতেও বলেছে ডিএমপি।প্রসঙ্গত, দীর্ঘ উনিশ মাস পর রাজধানীতে জনসভার আয়োজন করতে যাচ্ছে বিএনপি। এ সমাবেশের মাধ্যমে নিজেদের জনপ্রিয়তা বা জনসমর্থনের বিষয়টি জানান দিতে চায় দলটি। সর্বশেষ, ২০১৬ সালের ১ মে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে শ্রমিক সমাবেশ করে বিএনপি। এর আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। এর আগে ওই বছরের ৫ জানুয়ারি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার সুযোগ পায় দলটি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের দুই বছর পূর্তিতে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে সেই সমাবেশ করে বিএনপি। জাতীয়বাদী শ্রমিক দল এর আয়োজন করে।
Share this content: