
এবিএনএ: পছন্দসই বেসরকারি হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস ছাড়াই ফিরেছেন বিএনপি নেতারা। গত ২২ এপ্রিলের মতোই বিএনপির প্রতিনিধি দলকে মন্ত্রী বলেছেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন।রবিবার দুপুরের পর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সাত নেতা।বেলা তিনটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমাদের চেয়ারপারসন কারারুদ্ধ রয়েছেন, তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। সে বিষয়ে কথা বলতে আমরা এসেছি। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি, একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে তাকে যেন চিকিৎসা দেয়া হয়, যেখানে তিনি পছন্দ করেন।’
মন্ত্রী কী বলেছেন- জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যারা দায়িত্বে আছেন, সচিব, আইপি প্রিজনসহ অনান্যদের সাথে আলাপ করে তিনি বিষয়টি দেখবেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যারা আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেও তিনি ব্যবস্থা নেবেন।’কবে ব্যবস্থা নেবেন- এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উনি সুনির্দিষ্ট বলেননি।’গত ২২ এপ্রিল বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে একই বিষয়ে দাবি জানিয়েছিল। সেদিনও মন্ত্রী বিধি অনুযায়ী এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন।
এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনুমতি পাওয়া যাবে কি না, জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘এটা আমরা বলতে পারছি না।’বিএনপি নেত্রী কোন হাসপাতালে যেতে চান, সেটিও আগেও জানিয়েছে বিএনপি। আজও ফখরুল বলেন, ‘আমাদের চেয়ারপারসনের পছন্দ হলো ইউনাইটেড হাসপাতাল। আমরা মনে করি যে, সেখানেই তাকে চিকিৎসা করানো উচিত। কারণ তিনি অসুস্থ রোগী। তার চয়েজটা (পছন্দ) গুরুত্ব দেয়া উচিত।গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া বন্দী হওয়ার পর ২৮ মার্চ তার অসুস্থতার খবর ছড়ায়। ১ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চার জন চিকিৎসককে দিয়ে গঠন হয় মেডিকেল বোর্ড।বোর্ডের পরামর্শে ৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়। সেখানে পরীক্ষা নীরিক্ষা করার পর চিকিৎসক জানান, বেগম জিয়ার ঘাড়ে ও কোমরের হাড়ে কিছুটা সমস্যা আছে। তবে রক্তের রিপোর্টগুলো ভালো, স্বাভাবিক আছে।এরপর ঈদুল ফিতরের আগে আবার বিএনপি নেত্রীর অসুস্থতার খবর জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা। এমনকি খালেদা জিয়ার মাইল্ড স্ট্রোক হয়েছে, এমন দাবিও করেন তারা।
সে সময় সরকার বিএনপি নেত্রীকে আবার বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে আনার উদ্যোগ নেয়। তবে তিনি জানান, এই হাসপাতালে আসবেন না। পরে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়ার প্রস্তাব দেয় সরকার। কিন্তু তাতেও রাজি হননি বিএনপি নেত্রী।তবে বিএনপি নেত্রী কারাগারে যাওয়ার পর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আর আদালতে হাজির হননি এবং তার মামলার তারিখ পড়ার আগে আগে নানা সময় বিএনপি নেতারা তাদের নেত্রীর অসুস্থতার বিষয়টি সামনে এনেছেন।
বিএনপির এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া মুক্ত থাকার সময় তার চিকিৎসায় নিয়োজিত তিন জন চিকিৎসকও তার স্বাস্থ্য নিয়ে নানা শঙ্কার কথা বলেন। একজন চিকিৎসক বলেন, খালেদা জিয়া ‘প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারেন’। একজন বলেন, ‘তিনি অন্ধ হয়ে যেতে পারেন’। একজন বলেন, ‘তার প্রস্রাব-পায়খানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।আবার গত রোজায় কারাগারে দেখা করে এসে একজন চিকিৎসক দাবি করেছেন খালেদা জিয়ার মাইল্ড স্ট্রোক করেছে। কারাগারে বন্দী থাকলে তার বড় ধরনের স্ট্রোক করতে পারে।
Share this content: