বিদেশি হ্যাকারদের কঠোর জবাব দেয়ার প্রত্যয় হিলারির

এ বি এন এ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, বিদেশি হ্যাকারদের আক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অন্য যেকোনো হামলার সমতুল্য। কঠোরভাবে এর জবাব দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। নির্বাচন কমিশনে বিদেশি হ্যাকারদের হ্যাকিংয়ের জন্য তিনি সরাসরি দায়ী করেছেন রাশিয়াকে। তবে ট্রাম্প এর জন্য বিদেশিদের সরাসরি দায়ী করেননি। বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, ট্রাম্প বরং নিজ দেশের মধ্যেই কাজ করা হ্যাকাররা এর জন্য দায়ী কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ট্রাম্প প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কেও বলেছিলেন, ‘তিনি (হিলারি) কেবল রাশিয়ার কথা বলেন। কিন্তু আমি জানি না তারাই এর পিছনে ছিল কি না। আমি বলতে চাচ্ছি, এটা রাশিয়া হতে পারে, চীনও হতে পারে। এটা অন্য যে কেউও হতে পারে। এটা হতে পারেন ৪শ পাউন্ড ওজনের কেউ।’ ওবামা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাইবার হামলার এই ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি কী হবে, তা সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এর মধ্যে বুধবার রিপাবলিকান জন কনইয়ারস কংগ্রেসের এক শুনানিতে বলেন, এটা ‘এখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতামতের ভিত্তিতে স্পষ্ট যে রাশিয়া সরকার ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কংগ্রেসের হ্যাকিংয়ের পিছনে ছিল। কেউ একজন এর জন্য ৪শ পাউন্ড ওজনের কাউকে দায়ী করছেন, এটা তেমন নয়।’ হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ওই হ্যাকিংয়ে রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতার কথা জানানো হয়নি। তবে হিলারি এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ওবামার প্রথম মেয়াদে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালেই তিনি এসব বিষয়ে আক্রমণাত্মক নীতির পক্ষে ছিলেন। সাইবার আক্রমণের জবাব কীভাবে দেয়া, সে প্রশ্নের জবাবে বিতর্কে তিনি বলেন, ‘ আমাদের এটা স্পষ্ট করতে হবে যে আমাদের কাছে যে ধরনের উপকরণ রয়েছে তা ব্যবহার করতে আমরা চাই না। আমরা ভিন্ন ধরনের কোনো যুদ্ধে জড়াতে চাই না। কিন্তু আমরা এই দেশের জনগণকে সুরক্ষিত রাখব।’ এবারই প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে। পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট একবিংশ শতাব্দীর এই বিশ্বে কীভাবে সাইবার যুদ্ধের নীতিমালা ঠিক করবেন, কীভাবে বিদেশি হ্যাকারদের মোকাবিলা করবেন, তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে অবশ্য সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘অন্য যে কারও চেয়ে আমাদের ভালো থাকা উচিত এবং হয়তো নয়। সাইবার বিশ্বে নিরাপত্তার প্রসঙ্গ খুব, খুব কঠিন বিষয়। এবং হয়তো এটা করাও খুব কঠিন।’ তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনের সময় থেকেই বিষয়টি নিয়ে হিলারির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ২০১০ সালেও তিনি বলেছিলেন, কোনো দেশ বা ব্যক্তি যদি হ্যাক করে, তাদের ‘পরিণতি বরণ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে পড়তে হবে’। তিনি আরও বলেন, ‘কোনো একটি দেশের নেটওয়ার্কের ওপর আক্রমণ সবার ওপরই আক্রমণ হতে পারে।’ তবে তিনি নিজে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন। এমনকি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারেও তিনি পারদর্শী নন। ফ্যাক্স করা কিংবা ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে নতুন আইপ্যাডকে সংযুক্ত করার মতো বিষয়ও তার কাছে কঠিন। তা সত্ত্বেও সাইবার নিরাপত্তা ও বিদেশি হ্যাকারদের নিয়ে তার অবস্থান ট্রাম্পের মতো ধোঁয়াশাচ্ছন্ন নয়। তিনি বিদেশি হ্যাকারদের কড়া জবাব দেয়ার পক্ষেই কথা বলেছেন। কূটনীতিতে অভিজ্ঞ হিলারি সাইবার আক্রমণ ও হ্যাকারদের মোকাবিলা করার জন্যও কূটনৈতিকভাবেই এগিয়ে যেতে চান।
Share this content: