আমেরিকা

শুধুই টাকার খেলা!

এ বি এন এ : এ বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট খরচ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ছাড়িয়ে যাবে। দুই প্রধান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী যত না ছুটছেন ভোটের পেছনে, তার চেয়ে বেশি অর্থের পেছনে। আপাতত এই খেলায় এগিয়ে আছেন হিলারি ক্লিনটন।
জুলাই মাসে হিলারি ক্লিনটন চাঁদা তুলেছেন প্রায় ৯ কোটি ডলার। অন্যদিকে ট্রাম্প তুলেছেন প্রায় ৮ কোটি। আগস্ট মাসের হিসাব এখনো মেলেনি, তবে হিলারি যে হারে ‘ফান্ড রেইজিং ডিনারের’ আয়োজন করছেন, তা থেকে স্পষ্ট, তিনি বেশ কয়েক কদম এগিয়ে।
হিলারি দাবি করেছেন, তাঁর তোলা অর্থের প্রায় অর্ধেকই এসেছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে, যারা গড়ে ২০০ ডলার করে চাঁদা পাঠিয়েছে। তবে জুলাই মাসের হিসাব থেকে দেখা যায়, এই পরিমাণ গড় চাঁদা দেওয়া মানুষের সংখ্যা ৪০ শতাংশেরও কম। তুলনায় ‘সমাজতন্ত্রী’ বার্নি স্যান্ডার্স বাছাই পর্বের নির্বাচনে যে ২৩ কোটি ২০ লাখ ডলার তুলেছিলেন, তার সিংহভাগই এসেছিল গড়ে ২৭ ডলার চাঁদা থেকে।
সাধারণ মানুষের কথা বললেও হিলারি ও ট্রাম্প উভয়েই এখন ছুটছেন মোটা টাকার পেছনে। গত সপ্তাহে হিলারির সমর্থনে হলিউডে যে তারকাখচিত ডিনারের আয়োজন করা হয়, তাতে প্রতি প্লেটের জন্য দাম ধরা হয়েছিল ৩৩ হাজার ৪০০ ডলার। এতে ‘হোস্ট’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল অভিনেতা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিওর, তিনি আসতে না পারায় সে ভূমিকা গ্রহণ করেন পপ গায়ক জাস্টিন টিম্বারলেক ও অভিনেত্রী জেসিকা বিল।
দুই সপ্তাহ আগে ফ্লোরিডায় হিলারির সমর্থনে একাধিক ফান্ড-রেইজিং ডিনারের আয়োজন করা হয়, এর মধ্যে মায়ামি বিচ শহরে আয়োজিত এক ডিনারে মাথাপিছু প্লেটের দাম ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার ডলার। তবে এই ডিনারে হোস্টের হিসাবে দায়িত্ব পালনের সম্মান অর্জনের জন্য তাদের কমপক্ষে ১ লাখ ডলার চাঁদা দিতে হয়। খুবই ব্যক্তিগত পার্টি, ফলে কোনো সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তবে লোকমুখে যে খবর বেরিয়েছে, তাতে দেখা যায়, হিলারি সেখানে দেওয়া ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক অসমতার কথা বলেছেন।
গত সপ্তাহে মিশিগানেও ফান্ড-রেইজিং ডিনারে অংশ নেন হিলারি। প্লেটপ্রতি ২৫ হাজার ডলার চাঁদার এমন একটি ডিনারে অতিথিদের গান গেয়ে শোনান বিখ্যাত গায়িকা আরিথা ফ্রাঙ্কলিন। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, সেখানে মোট অতিথির সংখ্যা ছিল ৭০।
হিলারি ও ট্রাম্প উভয়েই তাঁদের শতকোটিপতি বন্ধুদের কাছে অর্থের আবেদন করেছেন। অধিকাংশ রিপাবলিকান ধনকুবের এবার ট্রাম্পকে এড়িয়ে চলছেন। হিলারির সেই সমস্যা নেই। জর্জ সরোস, ওয়ারেন বাফেটসহ প্রায় দুই ডজন শীর্ষ ধনকুবের পকেট খুলে তাঁকে চাঁদা দিয়ে সাহায্য করছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখনো প্রায় তিন মাস বাকি। যে হারে এই দুই প্রার্থী চাঁদা তুলছেন, তাতে অনেকের বিশ্বাস, এ বছর শুধু প্রেসিডেন্ট নির্বাচন খাতে যুক্তরাষ্ট্রে কম করে হলেও ৫০০ কোটি ডলার খরচ হবে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button