এবিএনএ: জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য দেশের দুই হাজার মানুষ জীবন দিয়ে অভ্যুত্থান ঘটাননি। তারা জুলুমের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছে। গত ১৬ বছরে বিরক্ত হতে হতে তাদের পিঠ দেয়ালে লেগে গিয়েছিল।
আজ শনিবার সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সংস্কার প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। মানুষ যাতে স্থায়ী ফল ভোগ করতে পারেন, সেজন্য তা করা হচ্ছে। তা নিয়ে কতিপয় লোক কি বলেছে, সেটা দেখার বিষয় নয়।
এর আগে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সিলেট বিভাগে নিহত ২৬ জনের মধ্যে ১৮ জনের পরিবারের হাতে আর্থিকসহায়তা বাবত ৫ লাখ টাকা করে চেক প্রদান করা হয়। সিলেট বিভাগের নিহতদের অনেকের পরিবারে একাধিক দাবিদার থাকায় তাদের সহায়তা পরবর্তীতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশনের সদস্যরা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে নির্বাচন কমিশন সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, নির্বাচন কমিশন সংস্কার না করলে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যাবে না। আমরা বলেছি, রাষ্ট্রের সবকিছু সংস্কার করে নির্বাচনে যান। আমরা এটাও বলছি না; আগামী ৫-৬ বছর সংস্কার করেন। কিন্তু সংস্কারের জন্য ন্যূনতম একটা যৌক্তিক সময় লাগবে।
৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের সংবিধান পাঁচ বছরের জন্য দেশের মানুষকে একটি ‘জনতার সরকার’ উপহার দিতে পারেনি উল্লেখ করে সারজিস বলেন, আমরা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করতে পারেনি। সেই সাংবিধানিক সংস্কারও প্রয়োজন। ইশতেহার দিয়ে প্রতিটি সরকার ক্ষমতায় আসে। কিন্তু পরে তারা ইশতেহার ভুলে যায়।
সারজিস আলম বলেন, হাইকোর্টে এখনও আওয়ামী লীগের কিছু দোসর বসে আছে, যারা তাদের যোগ্যতার বলে সেখানে যায়নি। তোষামোদি আর তেলবাজি করে তারা সেখানে গিয়েছিল। তাদেরকে এই জায়গা থেকে অপসারণ করা প্রয়োজন।
চেক বিতরণকালে সারজিস আলম জানান, সারাদেশ থেকে প্রায় ১৬০০ জনের বেশি শহিদ পরিবারের তালিকা তাদের কাছে এসেছে। যাচাই-বাছাই করে নির্বাচিতদের পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে গিয়ে শহীদের পরিবারের হাতে অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হবে। সিলেটে অনুদানপ্রাপ্ত শহীদরা হলেন- হোসেন মিয়া, আশরাফ আলম, তোফাজ্জুল হোসেন, সানি আহমদ, আতিকুর রহমান, গৌছ উদ্দিন, মিনহাজ আহমদ, আয়াতুল্লাহ, পাবেল আহমদ কামরুল, জয় আহমদ, সাংবাদিক আবু তাহের তুরাব, সুহেল আহমদ, মোস্তাক আহমদ, সুহেল আকঞ্জি, মইনুল আহমদ ইমরান, রিপন চন্দ্র শিল, সোহাগ মিয়া ও আনাস মিয়া। তাদের পক্ষে কারও স্ত্রী, বাবা ও মা অনুদান গ্রহন করেন।
এ সময় জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।