জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজশিক্ষা

শিশুদের ওপর জিপিএ–৫ নির্যাতন হচ্ছে: আসাদুজ্জামান নূর

এবিএনএ : সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্দেশ দিয়ে রোবোটের মতো শিশুদের বড় করা হচ্ছে। তাদের ওপর জিপিএ-৫ নির্যাতন হচ্ছে। এ নির্যাতনের কারণে তাদের অবস্থা খারাপ। অভিভাবকেরা জিপিএ-৫ এর পেছনে না ছুটে শিশুদের সুকুমার মনের বিকাশ ঘটাতে হবে।

কথাগুলো বলেছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। রাজধানীর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘শিশুদের স্বপ্নের পৃথিবী’ শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। আজ শনিবার সকালে ব্রাইটার টুমরো ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, শিশুদের আঁকা ছবি দেখলেই তাতে মা-বাবার নির্দেশ আছে বোঝা যায়। তারা তাদের কল্পনার রাজ্যে ঘুরে বেড়ায়। বড়দের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় তাদের মনে কী চলছে। শিশুদের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রকৃতি-আকাশ-নদী-ফুল-পাখি চেনাতে হবে। তাদের গ্রামে নিয়ে যেতে হবে।

মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ এক উপস্থাপনায় বলেন, শিশুদের সুস্থভাবে গড়ে তুলতে অভিভাবকদের সদিচ্ছাই যথেষ্ট নয়, এ জন্য তাদের কী প্রয়োজন তা বুঝতে হবে। তিনি মাছ ও বানরের বন্ধুত্বের গল্প দিয়ে বিষয়টি বোঝান। এক ঝড়ের দিনে মাছটি বিপদে পড়েছে মনে করে তাকে বাঁচাতে বানর বন্ধু তাকে গাছে তুলে নেয়। ফলে মারা যায় মাছটি। এভাবে যেন ভালো করতে গিয়ে শিশুদের অমঙ্গল ডেকে না আনা হয়।
.অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন বলেন, শিশুদের ওপর গোপন নজরদারি করা উচিত নয়। এতে তার মন সন্দেহপ্রবণ হয়। এ ছাড়া শিশুকে সমন্বিত সিদ্ধান্ত নিতে শেখাতে হবে। প্রযুক্তির যৌক্তিক ব্যবহার শেখাতে হবে।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া হৃদিতার বাবা মাহফুজুল হক বলেন, ‘এখানে এসে আমার প্রাণটা যেন জেগে উঠেছে। শিশুদের ভালোভাবে বেড়ে ওঠা ও গড়ে তোলার জন্য মা-বাবার কাউন্সেলিং প্রয়োজন।’
শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্যে গঠিত ব্রাইটার টুমরো ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক জয়শ্রী জামান বলেন, ‘ব্রাইটার টুমরো মানেই শিশু। আমার সন্তানদের হারিয়েছি। আমি চাই না আর কোনো পরিবারে এ ধরনের ঘটনা ঘটুক। প্রতিটি শিশু যেন তার মনের রঙে বেড়ে ওঠে।’
সংগঠনের সহসভাপতি রাশেদ আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা করেন জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সদস্য ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রকাশিত ভারত বিচিত্রার সম্পাদক নান্টু রায়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এ এস এম বদরুদ্দোজা, পর্বতারোহী এম এ মুহিত, ব্রাইটার টুমরো ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. ফারসিক ভূইয়া, শিল্পী তরুণ ঘোষ প্রমুখ।
আলোচনা শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৬০ জন শিশু-কিশোরকে প্রথম পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button