
এবিএনএ: রাজধানীতে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সারা দেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও চলছে আন্দোলন। সেখানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাত্র ১৫ মিনিটের বক্তব্যে নিয়ন্ত্রণে আনেন সংসদ সদস্য (এমপি) শামীম ওসমান।বক্তব্য শেষে রাস্তা ছেড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যায়।এটাকে স্থানীয় অনেকেই শামীম ওসমানের ‘কারিশমা’ বলে জানিয়েছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শামীম ওসমান বলেন, ‘সমাজকে একটা ধাক্কা দেওয়ার দরকার ছিল। তোমরা ধাক্কা দিয়েছো। বাকিটা প্রশাসন করবে। তোমরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছ, কীভাবে ট্রাফিকগিরি করতে হয়।’ আজ দুপুরে জুমার নামাজের পর শহরের চাষাড়ায় খাজা সুপার মার্কেটের সামনে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। শামীম ওসমান বলেন, ‘লাইসেন্স নাই, চাবি আটকিয়েছো, এটা ভালো করেছো। চাবিগুলো আমার কাছে দাও।’ এ সময় অর্ক নামে এক ছাত্র জব্দ করা চাবির ছড়া শামীম ওসমানের হাতে তুলে দেন।
নারায়ণগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসলে শামীম ওসমান অর্কের হাতে চাবি তুলে দিয়ে বলেন, ‘এ চাবি ছাত্রদের পক্ষ থেকে সদর থানার ওসিকে বুঝিয়ে দাও। এগুলো তার কাছে থাকবে। সেখান থেকে গাড়ির মালিকরা তাদের কাগজপত্র দেখিয়ে চাবি সংগ্রহ করবে।’ শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীর গত পাঁচদিন যেভাবে আন্দোলন করে রাস্তায় ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেছে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে প্রশাসনকে। আমি নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনকে নির্দেশ দিচ্ছি আপনারা আজ থেকে সার্বিক ব্যবস্থা নিবেন। যেখানে সেখানে গাড়ি থেমে থাকবে না। কাগজপত্র ছাড়া এবং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। আমার জেলায় কোন অনিয়ম থাকবে না।’
‘কোমলমতি ছাত্রদের পিতা হিসেবে আজ আমি তাদের বাড়ি ফিরে যেতে অনুরোধ করেছি। তারা বাড়ি ফিরে যাবে। কিন্তু রোববারের মধ্যে যদি আপনারা ওদের মত রাস্তা সুশৃঙ্খল করতে না পারেন, তাহলে আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাঠে নামবো। আমিও তাদের সঙ্গে রাস্তায় উপস্থিত থাকবো।’
শামীম ওসমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা সকলে মিলে একটা সিদ্ধান্ত নাও, শহরের কোন কোন স্থানে ফুটওভার ব্রিজ, স্পিড ব্রেকার প্রয়োজন। আর কী কী প্রয়োজন সেসব তোমরা তোলারাম কলেজ, মহিলা কলেজ ও অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরা মিলে তালিকা কর। তারপর সোমবার তা জমা দাও। আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখো। তোমরা বাড়ি যাও। মা-বাবার কাছ থেকে দোয়া নাও।’ এ সময় শামীম ওসমান আন্দোলন শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফিরে যাবার অনুরোধ জানিয়ে ঢাকার কুর্মিটোলায় বাস চাপায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর জন্য উপস্থিত সকলকে নিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। এর পরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়।
শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘আমি দেশের বাইরে ছিলাম। আজই ফিরে এসেছি। ফিরে এসে দেখি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। অবর্ণনীয় কষ্ট করছে তারা। তাদের এ অবস্থা দেখে একজন পিতা হিসেবে আমি কষ্ট পেয়েছি। যা করার কথা প্রশাসনের তা তারা করছে। তাই ওদের প্রতি সহানুভুতি ও ভালবাসার অনুভুতি থেকে প্রশাসনকে ছাত্রদের মত করে শৃঙ্খলা বজায় রাখায় নির্দেশ দিয়েছি।’
Share this content: