আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা সংকটে দায়ী বিশ্ব সম্প্রদায়: সুচি

এবিএনএ : মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের দমনপীড়নের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দুষলেন দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সুচি।

আন্তর্জাতিক মহলের ‘নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি’ মিয়ানমারের সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সুচি এসব কথা বলেন। মিয়ানমারের জাতিগত জটিলতার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাসীর এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, সেখানে সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার পর। ওই হামলার জন্য মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করেছে সরকার।’

সুচি বলেন, ‘আমি খুব খুশি হব যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সব সময় বড় ধরনের অসন্তোষ ছড়ানোর কারণ তৈরি না করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ার জন্য অগ্রগতি আনতে এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আমাদের সহযোগিতা করে।’ পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলার বিষয়টি এড়িয়ে প্রত্যেকে যদি শুধু পরিস্থিতির নেতিবাচক দিকের প্রতি মনোযোগ দেয় তাহলে তা কোনো কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। শান্তিতে নোবেলজয়ী জানান, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি তিনি উন্নত করতে চান।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি এবং শান্ত করেছি।’ বর্তমানে রাষ্ট্রীয় সফরে সিঙ্গাপুরে থাকা সুচি বলেন, ‘কেবল মুসলিমরাই আতংকিত ও উদ্বিগ্ন নয়। রাখাইনরাও উদ্বিগ্ন, তারা উদ্বেগে আছে এ কারণে যে, শতকরাভিত্তিতে রাখাইন জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে।’

গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ হামলায় ৯ সীমান্ত পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যের মুসলিম রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোতে শুরু হয় সেনা অভিযান। এরপর সহিংসতায় ৮৬ জনের মৃত্যুর খবর স্বীকার করেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে ৬৯ জনকে সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদী বলেছে তারা।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, মুসলিম রোহিঙ্গা নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। আর রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, নিহতের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। জাতিসংঘ এই সেনা অভিযানে ‘জাতিগত হত্যা’ উল্লেখ করে বলছে, সেনা অভিযানের পর থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করেছে। এ সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্যাতন, লুঠ, গণধর্ষণ এবং তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তা অস্বীকার করেছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button