বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমঝোতার ভিত্তিতেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: সু-চি

এবিএনএ : বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমঝোতার ভিত্তিতেই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু-চি। গত বৃহস্পতিবার নেপিদোতে জাপানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আশাহি শিমবুনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই প্রতিশ্রুতির কথা জানান। এ সময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উৎসাহিত করারও প্রতিশ্রুতি দেন এই নেত্রী। প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সু-চি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আইন বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন বিদেশি পরামর্শকদের সহায়তা নিতে আপত্তি নেই মিয়ানমারের। বাংলাদেশের সঙ্গে যে সমঝোতা হয়েছে আমরা সে মোতাবেকই আগাব।’
গত মে মাসে রোহিঙ্গাদের আবাস্থল রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না তা তদন্ত করতে বিদেশি আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠন করার ঘোষণা দেয় মিয়ানমার সরকার। এ বিষয়ে মিয়ানমারের নেত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি তদন্ত কমিশনটি আমাদের পরামর্শও দিতে পারবে, যা দীর্ঘমেয়াদে রাখাইনে পরিস্থিতির উন্নয়নে সহায়ক হবে।’মিয়ানমারে ফেরত গেলে আবার হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না-এ বিষয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদেরকে সব নাগরিকদেরই নিরাপত্তা দিতে পারতে হবে, বিশেষ করে স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে। সে জন্য আমরা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ওপর জোর দিচ্ছি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।’জাতিগত সমস্যাগুলোর সমাধানে তার সরকারের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনা কুড়িয়েছে- এ ব্যাপারে সু-চি বলেন, ‘একটা ঘটনাকে এক এক দিক থেকে দেখা যায়। তারা তাদের মতো করে ব্যাখ্যা করেছেন। আমাদের অনুধাবন তাদের চেয়ে ভিন্ন।’রাখাইনের বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা অবিশ্বাসের কথা উল্লেখ করে সেখানে শান্তি ‘রাতারাতি’ অর্জন করা সম্ভব নয় বলেও জানান সু-চি। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে গত বছরের আগস্ট থেকে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে বাংলাদেশে এসেছে। রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নিপীড়নকে গণহত্যা আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ।সংস্থাটি মনে করে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে যে পরিবেশ দরকার তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব মিয়ানমারের। কিন্তু এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও স্থায়ীভাবে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়নি। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারকে নিজেদের দেশ মনে করলেও, মিয়ানমার তাদেরকে নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেয়নি।সর্বশেষ দেশটি জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার সঙ্গে একটি সমঝোতা করেছে। ওই সমঝোতায় জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের বসবাসের এলাকা এবং যেখানে তার ফিরে যেতে চায়, সেসব এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করা হবে। যাতে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব হয় এবং বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য দিতে পারা যায়।
Share this content: