আন্তর্জাতিকলিড নিউজ

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রেখে দেয়ার বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব নিয়ে মুখ খুললেন জাতিসংঘ দূত

এবিএনএ : রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে রেখে দেয়া সংক্রান্ত বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব নাকচ হওয়ার দু’মাস পর এ নিয়ে মুখ খুললেন জাতিসংঘের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মিজ মিয়া সেপ্পো। শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর পরামর্শে তৈরিকৃত বিশ্বব্যাংকের রিফিউজি পলিসিতে রোহিঙ্গাসহ অন্য উদ্বাস্তুদের আশ্রয়দাতা রাষ্ট্রগুলোর উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্তকরণের (একীভূত) প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ বিষয়ে ঢাকার মতামত চেয়ে বলা হয়েছিল ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে মতামত না পাঠালে প্রস্তাবটি সরকার মেনে নিয়েছে বলে ধরে নেয়া হবে। ডেটলাইন শেষ হওয়ার আগেই ঢাকা কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে প্রস্তাবটি নাকচ করে।
তখন বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে সৃষ্ট উদ্বেগ নিরসনে একটি ব্যাখ্যা দিলেও জাতিসংঘ বা ইউএনএইচসিআর, যাদের সুপারিশে বিশ্বব্যাংক উদ্বাস্তু বিষয়ক লোন পলিসি রিভিউর উদ্যোগ নিয়েছিল তারা ছিলো নীরব। রোববার সকালে কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ডিকাব- এর সিগনেচার প্রোগ্রাম ‘ডিকাব টক’ এ অংশ নিয়ে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো দাবি করেন, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রেখে দেয়া বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব ছিল একটি ভুল বোঝাবুঝি মাত্র, যার অবসান ঘটেছে। তিনি এ নিয়ে কথা না বাড়িয়ে বরং রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান নিয়ে ভাবার তাগিদ অনুভব করছেন বলে জানান। খোলাসা করেই জাতিসংঘ দূত বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সকলের দায়িত্ব রয়েছে।
এটা কেবল বাংলাদেশের দায় নয়। সংকটের টেকসই সমাধানে প্রত্যেক রাষ্ট্রের উচিত নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা করা। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ডিকাব টকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো আরও বলেন, আফগানিস্তান সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুটি কিছু হলেও আড়ালে চলে যাচ্ছে। কোন কিছুতেই যেনো রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রশ্নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ফোকাসে পরিবর্তন না আসে সেটাই কামনা করেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে মিজ মিয়া সেপ্পো জানান, মিয়ানমার ও আফগানিস্তানের পরিবর্তিত নেতৃত্বের স্বীকৃতি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান না হওয়ায় আসন্ন ৭৬তম হাই লেভেল সামিটে তারা প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে সম্মেলনে অনুপস্থিতির কারণে দেশ দুটির অবস্থানও জানা সম্ভব হচ্ছে না।

মিয়া সেপ্পো বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি কেউ যেন ভুলে না যায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে এ সঙ্কটের বড় ভিকটিম বাংলাদেশকে। ভাসানচরে জাতিসংঘ যুক্ত হবার সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করি দ্রুতই তা সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্কুল খোলাকে স্বাগত জানিয়ে মিয়া সেপ্পো বলেন, আমাদের স্কুল খোলার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা দরকার। ডিকাব সভাপতি পান্থ রহমানের সঞ্চালনায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button