
এবিএনএ : বগুড়া-৬ আসনে আসন্ন উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ সভাপতি ডঃ সিদ্দিকুর রহমান। শুক্রবার বিকেলে আওয়ামীলীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডি অফিস থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে ওইদিনই জমা দিয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডঃ সিদ্দিকুর রহমানের সহধর্মীনি শাহনারা রহমান, পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং ঢাকায় অবস্থানরত বগুড়াবাসী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগ নেতা। এর আগে শুক্রবার সকালে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ৩৮তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে গনভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এদিকে ডঃ সিদ্দিকুর রহমান দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার ফলে বদলে গেছে ভোটের মাঠের সকল হিসেব নিকেশ। মার্কিন প্রশাসনে প্রভাবশালী বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার কৃতি সন্তান ডঃ সিদ্দিকুর রহমান নিজ জেলার উন্নয়নে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চান বলে জানান ঘনিষ্ঠজনেরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে বগুড়ার আরো অন্তত ১২জন নেতা জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে ডঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পিছিয়েপড়া বগুড়ার উন্নয়নে যোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। বিএনপির শাসনামলে বগুড়ার মানুষ কেবল বঞ্চিত হয়েছেন। চাকরি ক্ষেত্রে সুযোগ পায়নি। বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। হাজার হাজার শিক্ষিত ছেলে-মেয়ে বেকারত্বের অভিশাপে আছে।
তিনি বলেন, বিএনপির কূটকৌশলের কারণে এরআগে বগুড়া সদরে কখনো কেউ আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত হতে পারেননি। শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিলে মাঠের কর্মীদের নিয়ে যেকোনো ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট যুদ্ধে জয়ী হয়ে সদর আসনটি আওয়ামীলীগ সভানেত্রীকে উপহার দেবেন।
উচ্চ শিক্ষিত ক্লিন ইমেজের ডঃ সিদ্দিকুর রহমানকে নিয়ে বিরোধী শিবিরও খুব টেনশনে আছে। বহুধা বিভক্ত জেলা বিএনপি ভোটের আগেই হেরে যাবে বলে শংকা তাদের। দলের কারো ওপরেই ভরসা রাখতে পারছেননা স্থানীয় কোনো নেতা। প্রতিদিনই দলীয় কার্যালয়ে পাল্টাপাল্টি তালা লাগিয়ে নিজেদের সক্রিয়তার কথা বলছে। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সংস্কারপন্থীদের হাতে কোনঠাসা বিএনপির একটি গ্রুপটি চাইছে অন্য জেলার কেন্দ্রীয় কোনো নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হোক। অন্য একটি অংশ চাইছে নবগঠিত জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির কাউকে মনোনয়ন দেয়া হোক। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি কাকে মনোনয়ন দেবে, আদৌ কাউকে মনোনয়ন দেবে কি না নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা।
এদিকে আওয়ামীলীগ থেকে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে, তা এখনও চুড়ান্ত হয়নি। রোববার বিকেলে মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত হবে দলীয় প্রার্থী কে হবেন। তবে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা মনোনয়ন লাভের পর সকলে ঐক্যবদ্ধ থেকে দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়ে আনবেন বলে জানা
ডঃ সিদ্দিকুর রহমান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক থাকাকালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করায় গ্রেফতার হন। দিনভর অকথ্য নির্যাতনের পর ছাত্র আন্দোলনের মুখে ছাড়া পেলেও জিয়া সরকারের প্রশাসনিক চাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে প্রাণ বাঁচাতে বিদেশে চলে যান। যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া বিভাগে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে প্রায় তিন যুগ চাকরি শেষে অবসর নেন।
গত ১৫ মে বুধবার সকালে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বগুড়ার উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বপরিবারে বাংলাদেশে আসেন ডঃ সিদ্দিকুর রহমান।
Share this content: