

এবিএনএ : রোহিঙ্গাদের নির্মূল করতেই মিয়ানমার রাখাইনে পরিকল্পিত গণহত্যা চালাচ্ছে। রোহিঙ্গা নিধনের দায় মিয়ানমারকেই নিতে হবে। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাকাণ্ডের পরও বিশ্ববাসীর নীরব থাকা বিস্ময়কর।এমন মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী তিন নারী ইরানের শিরিন এবাদি, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান ও যুক্তরাজ্যের ম্যরিয়েড মুগুয়্যার। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে এসে বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা এসব কথা বলেন। এসময় তারা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের অবস্থা ও তাদের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়েরর সচিব সাজ্জাদুল হাসান এসময় উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করে বলেন, নোবেলজয়ী তিন নারী প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যা দেখেছেন, তাতে তারা গভীরভাবে শোকাহত। যুক্তরাজ্যের মুগুয়্যার রাখাইনের ঘটনাকে গণহত্যা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি রোহিঙ্গা বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায় এখনো নীরব থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
নোবেলজয়ী ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বলেন, রাখাইনের গণহত্যার দায় মিয়ানমারকে অবশ্যই নিতে হবে। রোহিঙ্গা নিধনের ওপর যেসব খবর গণমাধ্যমে আসছে, ভয়াবহতা তারচেয়ে অনেক বেশি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তাওয়াক্কুল কারমান বলেন, তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শতাধিক নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এদের সবাই মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এছাড়া অনেক শিশুর অভিভাবক সেখানে হত্যা করা হয়েছে। সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী তিন নোবেলজয়ী নারীকে বলেন, বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ১০ লাখ ৭৮ হাজারের মতো রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তিও করেছে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার যেন রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নেয় তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, সফররত নোবেলজয়ী তিন নারী সোম ও মঙ্গলবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে হত্যা, ধর্ষণ, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার ভয়াবহ বিবরণ শোনেন।