জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

বিলিয়ন ডলারের রণতরী: বাংলাদেশের বিবেচনায় এগিয়ে তুরস্কের প্রস্তাব

এবিএনএ : বাংলাদেশ নৌবাহিনী তার বহু বিলিয়ন ডলারের ফ্রিগেট বা রণতরী নির্মাণ কর্মসূচি চূড়ান্ত করার উদ্দেশে আরো এক ধাপ এগোলো। তুরস্কের ‘ডেইলি সাবাহ’ জানাচ্ছে, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড বা সিডিডিএল -এর উদ্যোগে এই রণতরীতে নির্মাণ করা হবে অত্যাধুনিক মিসাইল সিস্টেম। বেশ কয়েকটি দেশ এই আড়াই বিলিয়ন ডলারের এই কর্মসূচিতে আগ্রহ দেখিয়েছিলো। তাদের মধ্যে ছিল যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং দক্ষিণ কোরিয়া। তবে তুরস্ক, চীন, নেদারল্যান্ডস এবং ইতালি তাদের পেছনে ফেলে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় বলে জানাচ্ছে ‘ডেইলি সাবাহ’ ।
তুরস্কের এসটিএম ডিফেন্স টেকনোলজিস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেড ইনকর্পোরেটেড -যারা মিলগেম (ন্যাশনাল শিপ) প্রকল্পের অংশ হিসাবে ইস্তাম্বুল ফ্রিগেট তৈরি করেছে, তারা দৌড়ে এগিয়ে আছে। সূত্র বলছে, একদিকে যেমন এটি ব্যয়ের অঙ্ক কমাচ্ছে অন্যদিকে তুরস্কের অত্যাধুনিক সেন্সর এবং রকেট এই রণতরীতে সম্পৃক্ত করার সুযোগ থাকছে। বাকি তিনটি দেশের বিড তুরস্কের মতো উপযুক্ত না হওয়ার মূল কারণ হল- তারা হয় আরও ব্যয়বহুল নতুবা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ‘Type 054 frigate’ – তৈরির জন্য চীন প্রায় ৩৭৮ মিলিয়ন ডলারের দর হেঁকেছে।

সেইসঙ্গে সিডিডিএলের থেকে বেশি অংশের শেয়ার তারা নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে, যাতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সায় নেই। Type 054 frigate- এই রণতরী ২০০৭ সালে চীনা সৈন্যরা প্রথম ব্যবহার করে , যা ৪ হাজার টন পর্যন্ত মাঝারি-পরিসরের বিমান, প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র, এন্টি-শিপ মিসাইল বহনে সক্ষম। শুধু তাই নয় এর সঙ্গে একটি এন্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার রকেট লঞ্চার সিস্টেমও রয়েছে। আলোচনায় ছিল নেদারল্যান্ডের প্রস্তাবটিও । ডামেন এবং সিডিডিএলের সম্মিলিত প্রস্তাবটি বাংলাদেশের নৌবাহিনীর চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কারণ প্রয়োজন মত এতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন ক্ষমতা সম্পন্ন কোনো প্রযুক্তি সম্পৃক্ত করার ব্যবস্থা নেই। ইতালির প্রস্তাবটি সবথেকে বেশি পছন্দ হয়েছিল বাংলাদেশের নৌবাহিনীর। ইতালি আমেরিকাকে বহুমুখী ক্ষমতা সম্পন্ন একটি রণতরী ডিজাইন করে দিয়েছিলো। তবে ইতালির প্রস্তাবটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই সবদিক বিচার করে আপাতত তুরস্কের প্রস্তাব নিয়েই ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে এর একটি বাড়তি সুবিধাও আছে।

তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরী হলে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী এন্টি-শিপ মিসাইলের সাবসিস্টেমগুলির রফতানির জন্য দরজা খুলে যাবে। যদি তুরস্ক এই প্রকল্প গ্রহণ করে তাহলে তুর্কি শিপবিল্ডার এবং সিডিডিএল-র মধ্যে সহযোগিতার পথ প্রশস্ত হবে। তুরস্ক ইস্তাম্বুল ফ্রিগেট নির্মাণে শীর্ষস্থানীয় দুটি প্রতিরক্ষা সংস্থা এসেলসান এবং হাভেলসানকে তাদের প্রধান ব্যবসায়িক অংশীদার হিসাবে রেখেছিলো। এটিতে প্রায় ৮০ জন সাব-কন্ট্রাক্টর রয়েছেন যারা ১৫০ টিরও বেশি সিস্টেমে কাজ করেছেন। এই সাব কন্ট্রাক্টরের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ তুরস্কের এবং বাকিরা আন্তর্জাতিক কোম্পানি। তুরস্কের এই রণতরীর ডিফেন্স সিস্টেম ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুতে আঘাত হানতে সক্ষম, সেই সঙ্গে মাঝারি-পরিসরের বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতেও পারে । অত্যাধুনিক ত্রি-মাত্রিক রাডারগুলিও জাহাজে সংযুক্ত করা হবে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button