
এবিএনএ : রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মধ্যস্থতা করা নির্বাচন কমিশনের কাজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।তিনি বলেছেন, আমাদের কারও কাছে যাওয়ার দরকার নেই। ইসি একটি স্বাধীন সত্তা। আমরা শপথ নিয়েছি, কারও চাপে নতি স্বীকার করবো না। কারও কাছে যাবো না। এটাই যথেষ্ট। তাছাড়া আমাদের এখানে আন্তর্জাতিক অনেক মিডিওকার এসেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা করাতে পারেননি। তাই মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা আমরা নিতে চাই না, এটা আমাদের কাজও নয়।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের সংলাপ শেষে এমন মন্তব্য করেন সিইসি। এর আগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে গণমাধ্যমের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপ শুরু হয়। শেষ হয় বেলা পৌনে একটায়। এতে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ২৬ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।সংলাপের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সিইসি বলেন, এটি কমিশনের সিদ্ধান্ত। যদি পরিস্থিতি বিবেচনায় মনে করি সেনাবাহিনী দরকার আছে, তাহলে থাকবে।বর্তমান পরিস্থিতি নির্বাচনের অনুকূল রয়েছে দাবি করে কে এম নূরুল হুদা বলেন, বর্তমানে আমরা অনূকুল ও আস্থাশীল অবস্থানে আছি। কেউ আমাদের বিরক্ত করেননি। কমিশনে কেউ তার দাবি-দাওয়া নিয়ে আসেননি। আমরা এখনও পর্যন্ত আস্থাশীল আছি এবং থাকবো।নির্বাচনের সময় কী ধরনের সরকার থাকবে, সেই ব্যাপারে কমিশনের কোন ভূমিকা নেই বলে মনে করেন সিইসি। তিনি আরও বলেছেন, ইসি একটি কারিগরি প্রতিষ্ঠান। সরকার যে নির্বাচন পদ্ধতি ঠিক করে দেয়, সেভাবেই আমাদের ভোট কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। একসময় হ্যাঁ বা না ভোট ছিল। সেই সময়কার কমিশন সেই ভোট করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যে পদ্ধতি ছিল তারা সেটাই করেছে। কাজেই সবকিছু নির্ভর করে সরকার কোন ধরনের পরিবেশ ঠিক করে দেয়। এখন এই সরকারের অধীনে যে অবস্থা আছে সেভাবে নির্বাচন করতে হলে আমরা সেটি করবো। আর যদি সরকার পরিবর্তন করে তাহলে সেইভাবে হবে। কাজেই নির্বাচনের সময় কোন ধরনের সরকার থাকবে সে ব্যাপারে আমাদের কোনও ভূমিকা থাকার কথা নয়। আমরা তা নির্ধারণ করতে পারিও না।নূরুল হুদা বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। কারও প্রতি আমাদের দুর্বলতা নেই বা কারও প্রতি কোনও শত্রুতা নেই। একইসঙ্গে কারও প্রতি কোনও আর্কষণ নেই, কারও প্রতি বিকর্ষণও নেই। আমাদের আকর্ষণ-বিকর্ষণ যাই বলেন, সেটা রয়েছে নির্বাচনী আইনের প্রতি। এজন্যই আমরা আপনাদের বিরক্ত করছি। ব্যস্ততার মধ্যেও আপনাদের আমন্ত্রণ করেছি। আমরা আপনাদের সহযোগিতা ও সমর্থন চাই।এর আগে গতকাল বুধবার গণমাধ্যমের সঙ্গে ইসির প্রথম দিনের সংলাপ হয়। এদিন বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ইসি। সংলাপে আমন্ত্রিত ৩৬ জনের মধ্যে অংশ নেন ২৬ জন।প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেওয়া গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ইসিকে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন প্রধান দুই দলের মধ্যে সমঝোতা। তবে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ‘না’ ভোট প্রবর্তনসহ কয়েকটি বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত দেন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।ইসি গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সংলাপ শুরু করে। গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ শেষে ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
Share this content: