লাইফ স্টাইললিড নিউজ

যেসব খাবারে জিংক বেশি পাবেন

এবিএনএ : জিংক খুব গুরুত্বপূর্ণ এক পুষ্টি উপাদান। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে চিকিৎসকরা তাই এখন জিংক সমৃদ্ধ খাবার বা জিংক ক্যাপসুল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করা জিংক বা অন্য পুষ্টি উপাদান দ্রুত শরীরে কাজ করে, তেমনটা বলে আসছেন পুষ্টিবিদরা। আমাদের শরীরে যে ৩০০টির বেশি এনজাইম আছে, তাদের ওপর জিংক ভালোভাবে কাজ করে।

দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, দেহকোষ বৃদ্ধি ও বিভাজন, প্রোটিন ও ডিএনএ উৎপাদনে ভূমিকা রাখে জিংক। শরীরের জন্য এই পুষ্টি উপাদান খুব জরুরি হলেও বিশ্বের অসংখ্য মানুষ এখনো জিংক ঘাটতি জনিত সমস্যায় আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ পর্যাপ্ত জিংক গ্রহণ করে না।

আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের তথ্যমতে, ১৪ বছরের উপরে সব পুরুষকে প্রতিদিন অন্তত ১১ মিলিগ্রাম জিংক অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। আর ১৪ বছরের বেশি নারীকে অন্তত ৮ মিলিগ্রাম জিংক গ্রহণ করা জরুরি। তবে সন্তান জন্ম দেয়া ও সন্তানকে দুধ পান করানো নারীদের প্রতিদিন ১২ মিলিগ্রাম জিংক গ্রহণ করতে হবে। আর ডাক্তাররা প্রতিদিন ১১ মিলিগ্রাম জিংক ক্যাপসুল সেবনের পরামর্শ দেন।

করোনার সংক্রমণ এড়াতে কোন কোন খাবার খেলে জিংক বেশি পাবেন, তা জেনে নিন এবার।

রেডমিট: রেড মিট অর্থাৎ গরু ও খাসির মাংসে পরিমাণ মতো জিংক থাকে। গরুর মাংসে ভিটামিন বি টুয়েলভও থাকে প্রচুর। ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ৩.২৪ মিলিগ্রাম এবং একই পরিমাণ খাসির মাংসে ৪.৮ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। কিন্তু রেডমিটে যেহেতু কোলেস্টেরল বেশি থাকে, সে কারণে তা বেশি খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ঝিনুক: ঝিনুকে কম ক্যালরি ও বেশি জিংক থাকে। কাঁকড়া, চিংড়ি এসবে জিংক থাকলেও যেকোনো খাবারের তুলনায় ঝিনুকে জিংক থাকে বেশি। ৫০ গ্রাম ঝিনুকে ৮.৫ মিলিগ্রাম জিংক থাকে।

মুরগির মাংস: প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে মুরগির মাংসে, যা মাংসপেশী গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তবে মুরগির মাংসে জিংকও আছে। নিয়মিত মুরগির মাংস খেলে হাড়, হৃদপিন্ড উন্নত হয় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ৮৫ গ্রাম মুরগির মাংসে ২.৪ মিলিগ্রাম জিংক থাকে।

সবজি: উদ্ভিদ জাতীয় কিছু খাবার আছে, যেগুলোতে জিংক থাকে পরিমাণ মতো। ডাল, ছোলা ও শিমে জিংক থাকে। এসব খাবারে কম ক্যালরি, কম ফ্যাট থাকে এবং প্রোটিন ও আঁশ থাকে। ১০০ গ্রাম ডালে ৪.৭৮ মিলিগ্রামের মতো জিংক থাকতে পারে। ১৮০ গ্রাম শিমে ৫ মিলিগ্রাম ও ১৮৪ গ্রাম ছোলায় ২.৫ মিলিগ্রাম জিংক থাকে।

কাজু বাদাম: কাজু বাদামে প্রচুর পরিমাণে জিংক, কপার, ভিটামিন এ, ভিটামিন কে এবং ফোলেট থাকে। ২৮ গ্রাম কাজু বাদামে ১.৬ মিলিগ্রাম জিংক থাকে।

ওট: সকালের নাস্তায় অনেকেই ওটমিল খেতে পছন্দ করেন। এতে প্রচুর আঁশ, বেটা গ্লুকেন, ভিটামিন বি সিক্স ও ফোলেট থাকে। এক বাটি ওটে ১.৩ মিলিগ্রাম জিংক থাকে।

মাশরুম: ভিটামিন এ, সি, ই ও আয়রন সমৃদ্ধ মাশরুমের ২১০ গ্রামে জিংক পাওয়া যায় ১.২ মিলিগ্রাম। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ মাশরুমে ক্যালরি থাকে কম।

মিষ্টি কুমড়ার বিচি: দারুণ পুষ্টিগুণে ভরা মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও কপার থাকে। আর ২৮ গ্রাম মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে জিংক থাকে ২.২ মিলিগ্রাম।

দুগ্ধজাত খাবার: দুধ ও দই এর মতো দুগ্ধজাত খাবারে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি জিংকও থাকে। ২৫০ মিলিলিটার লো ফ্যাট দুধে ১.০২ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। আর ২৫০ মিলিলিটার দইয়ে থাকে ২.৩৮ মিলিগ্রাম জিংক।

ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেট যতো ডার্ক হবে, তাতে জিংকের পরিমাণ ততো বেশি থাকবে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সক্ষম ডার্ক চকলেট। ১০০ গ্রামের ডার্ক চকলেটে জিংক থাকে ৩.৩ মিলিগ্রাম।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button