আমেরিকালিড নিউজ

হামলার পর পার্কিং লটে বসেই কাজ, বের হলো পত্রিকাও

এবিএনএ : বার্তা কক্ষে তখনও রয়ে গেছে আবছা রক্তের দাগ। তবু নাছোড়াবান্দা সংবাদকর্মীরা। ঘণ্টা তিনেকও হয়নি বন্দুকধারীর হামলায় প্রাণ গেছে পাঁচ সহকর্মীর। এর মধ্যেই ল্যাপটপ নিয়ে পার্কিং লটেই সবাই বসে পড়লেন কাজ করতে। লক্ষ্য একটাই— যেকোনো উপায়ে পরদিন পত্রিকা বের করা। হামলার কিছু সময় পরই চেজ কুক নামে পত্রিকাটির এক প্রতিবেদক টুইট করেন, ‘আমি এটা বলতে পারি— কালও আমাদের পত্রিকা ছাপা হবে।’ পরদিন যথারীতি বের হলো ‘দ্য ক্যাপিটাল’, যার প্রধান শিরোনাম— ‘ফাইভ শট ডেড অ্যাট দ্য ক্যাপিটাল’। বাল্টিমোরের সান গ্রুপের পত্রিকা ক্যাপিটাল গেজেট ১৮৮৪ সালে চালু হয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরোনো পত্রিকাগুলোর একটি। হামলার পর পত্রিকাটির শুক্রবারের সংখ্যা যাতে আটকে না-যায়, সে জন্য ক্যাপিটাল-কর্মীদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন বাল্টিমোর সান-এর বহু সাংবাদিক-কর্মীও। শুক্রবার প্রকাশিত পত্রিকায় তাদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেনি ক্যাপিটাল।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড রাজ্যের রাজধানী অ্যানাপোলিশে ক্যাপিটাল গেজেট কার্যালয়েই বন্দুকধারীর গুলিতে প্রাণ হারান চার সাংবাদিকসহ পাঁচজন। হামলাকারী পত্রিকাটির বার্তাকক্ষে ঢুকে অনবরত গুলি চালায়। এ ঘটনার পর হামলাকারী জ্যারড রামোসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।হামলার বর্ণনা দিয়ে ক্যাপিটাল গেজেটের কর্মীরা জানান, বার্তাকক্ষে ঢুকেই হামলাকারী অনবরত গুলি চালাচ্ছিল। নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে রিপোর্টার ও এডিটররা ডেস্কের নিচে, কাচের দেয়ালের আড়ালে লুকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছিলেন। অন্যদিকে গুলিতে কাচের দেয়াল ঝাঁঝরা হয়ে পড়ছিল। হামলার পর পত্রিকাটির প্রতিবেদক ফিল ডেভিস এক টুইটে জানান, ডেস্কের নিচে লুকিয়ে যখন শুনতে পাবেন যে আশপাশের মানুষের গায়ে গুলি লাগছে আর হামলাকারী তার অস্ত্র রিলোড করছে, এর চেয়ে আতঙ্কের আর কিছু হতে পারে না। মেরিল্যান্ড পুলিশ বলছে, এ হামলা চালানো হয়েছে টার্গেট করেই। তবে তা জঙ্গি বা সন্ত্রাসী হামলা নয়। আটক জ্যারড রামোস ২০১২ সালে ক্যাপিটাল গেজেটের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে ব্যর্থ হয়ে সেই ক্ষোভ থেকে এ হামলা চালিয়েছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button