এবিএনএ: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে যাত্রীবাহী বিমান ও সামরিক হেলিকপ্টারের মধ্যে সংঘর্ষের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের আরেকটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে ফিলাডেলফিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি আবাসিক এলাকায় একটি মেডেভাক প্লেন বিধ্বস্ত হয়েছে।এতে ছয়জন আরোহী ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)।
জেট রেসকিউ নামে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কোম্পানি এই উড়োজাহাজটি পরিচালনা করছিল। কোম্পানিটি জানিয়েছে, প্লেনটিতে একজন শিশু রোগী, তার একজন অভিভাবক এবং চারজন ক্রু সদস্য ছিলেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আরোহী জীবিত রয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করা যায়নি।
প্লেন চলাচলের তথ্য অনুযায়ী, উড্ডয়নের পর ১ হাজার ৬৫০ ফুট উচ্চতায় উঠেছিল প্লেনটি। কিন্তু এরপর আকস্মিকভাবে প্রতি মিনিটে ১১ হাজার ফুট গতিবেগে নিচে নামতে শুরু করে। বিষয়টি জানতে পেরে বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার বিমানটিকে বারবার ডাকলেও কোনো সাড়া মেলেনি। এ সময় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে বলতে শোনা যায়, ‘মেডেভাক মেড সার্ভিস, নর্থইস্ট টাওয়ার। মেডেভাক মেড সার্ভিস, নর্থইস্ট টাওয়ার। আপনি কি ফ্রিকোয়েন্সিতে আছেন?’ প্রায় এক মিনিট পর কন্ট্রোলারকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা একটি বিমান হারিয়েছি।’
ফিলাডেলফিয়ার মেয়র শেরেল পার্কার জানিয়েছেন, বিধ্বস্ত হওয়া প্লেনটির আগুন আশপাশের কয়েকটি বাড়ি ও যানবাহনে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও হতাহতের সংখ্যা এখনো জানা যায়নি।
আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলাডেলফিয়ার দমকল বিভাগ। এদিকে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর নর্থইস্ট ফিলাডেলফিয়া এয়ারপোর্ট সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও পরে আবার চালু হয়েছে বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সিএনএনকে জানিয়েছে। বিধ্বস্ত স্থানের বিপরীতে অবস্থিত রুজভেল্ট মলও খালি করা হয়েছিল বলে মলটির মুখপাত্র ক্রিস্টেন মুর। তবে সেখানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা আহতের খবর নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন সচিব শন ডাফি এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে জানান, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিমান দুর্ঘটনার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। এফএএ এবং জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড (এনটিএসবি) দুর্ঘটনাটির তদন্ত করবে। তদন্তকারীরা ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে মাঝ আকাশে হেলিকপ্টারের সঙ্গে একটি যাত্রীবাহী বিমানের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় হেলিকপ্টার ও বিমান উভয়ই বিধ্বস্ত হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় প্লেনের ৬৪ জন যাত্রী এবং হেলিকপ্টারের তিনজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।