আইন ও আদালতবাংলাদেশলিড নিউজ

মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসি হতে পারে আজ রাতে

এবিএনএ : নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষনেতা মুফুতি আব্দুল হান্নান এবং তার দুই সহযোগী শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি আজ বুবধার রাতে কার্যকর হতে পারে। রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে দুই কারাগারে তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র। মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল রয়েছেন কাশিমপুর হাউসিকিরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে। দেলোয়ার হোসেন রিপন রয়েছেন সিলেট কেন্দ্রীয়  কারাগারে।

এ দিকে গতকাল কারা কর্তৃপক্ষ তাদের স্বজনদের ডেকেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে ১২ এপ্রিলের (বুধবার) মধ্যে যে কোনো সময় দেখা করতে পারবেন। এ দিকে ফাঁসি কার্যকরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। কাশিমপুর ও সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তবে গতকালই আগাম খবরে সিলেট কারাগারে দেখা করেছেন দেলোয়ার হোসেন রিপনের বাবা-মা ও ভাইসহ স্বজনরা। সিলেট কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া বলেছেন, ফাঁসি কার্যকর করার আগে তাদেরকে ডাকা হবে।

মুফতি হান্নাননের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে, শরীফ শাহেদুল আলম বিপুলের বাড়ি চাঁদপুরে। আর শরীফ শাহেদুল আলম বিপুলের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়।

কাশিমপুর হাউসিকিউরিটি কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করতে রাজু ও রোমানের নেতৃত্বে ৬ জল্লাদ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই ভাবে সিলেট কারাগারেও ৪ জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

কারা সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতির কাছে করা প্রাণভিক্ষার আবেদনে মুফতি হান্নান ও শরীফ বিপুল বর্তমান সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশ স্বাধীনের জন্য অবদান ও জাতির জনক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কথা স্বীকার করে প্রশংসামূলক বক্তব্য তুলে ধরেছেন। সাথে সাথে দেশ পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শিতা ও সফলতার কথাও বলেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী ও জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।

২০০৮ সালে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এ মামলার ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ২০০৯ সালে আসামিরা আপিল করেন। বিচারিক আদালতের রায় বহাল রেখে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দুই আসামি মুফতি হান্নান ও বিপুল। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ করে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে আপিল বিভাগ। আসামিরা এ রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন জানালে গত ১৯ মার্চ তা খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ২১ মার্চ প্রকাশিত হয়। পরের দিন তিন জঙ্গির মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করে কারাগারে পাঠায় বিচারিক আদালত। মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানান। গত ৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেওয়ার পর নির্বাহী আদেশ ও জেলকোড অনুসারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button