মিয়ানমারে সুচি-সেনাবাহিনী মুখোমুখি


এবিএনএ: মিয়ানমারে সেনাবাহিনী রচিত সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুকির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি(এনএলডি)। মঙ্গলবার প্রস্তাবটি বর্মী সংসদে উত্থাপন করা হয়। এ নিয়ে এখন মুখোমুখি অবস্থানে সুচি ও সেনাবাহিনী। রয়টার্স, মিয়ানমার টাইমস। সংবিধান সংশোধন করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা কমিয়ে আনার আহ্বান জানানোর পর ২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারি সুচির মুসলিম উপদেষ্টা কো নিকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হলেও ঘটনার বিচারের কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি। ওই ঘ্টনার দ্বিতীয় বার্ষিকীতেই সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব আনলো এনএলডি।
মঙ্গলবার মিয়ানমারের স্পিকার টি খুন মিয়াত সংসদে দেয়া ভাষণে বলেন, ‘এনএলডি দলীয় সংসদ সদস্য অং কি নিয়ান্ত সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করতে জরুরি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।’ বয়টার্সের খবরে বলা হয়, সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব আনার ফলে সেনাবাহিনী ও সুচির এনএলডির মধ্যে উত্তেজনা ছড়াতে পারে। নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ের তিন বছর পর এই প্রথম সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেছে এনএলডি। নির্বাচনে জয় পেলেও সংবিধানের অদ্ভুত বিধানের কারণে প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি সুচি।

সেনাবাহিনীর ক্ষমতা কমানোর ডাক দিয়ে খুন হওয়া সুচির ইসলাম ধর্মাবলম্বী আইন উপদেষ্টা উপদেষ্টা কো নির ছবি হাতে এক ভিক্ষু।
২০১৭ সালে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযানের জেরে দেশটির সামরিক এবং বেসামরিক নেতাদের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। এরই মাঝে আকস্মিক সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলো। জাতিসংঘের হিসাবে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট শুরু হওয়া সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে রাখাইন থেকে প্রায় সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ২০০৮ সালে সেনাবাহিনীর তৈরি মিয়ানমার সংবিধানে প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্রসহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো সেনাবাহিনীর অধীনে রাখা হয়। সংসদের দুই কক্ষেই সেনাবাহিনীর জন্য এক চতুর্থাংশ আসন সংরক্ষণের বিধান করা হয়। সংবিধান সংশোধনে পার্লামেন্টের ৭৫ শতাংশের বেশি সদস্যের সমর্থনের লাগবে। তাই প্রস্তাব আনলেও তা বাস্তবায়ন করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ সুচির জন্য।