জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

মিয়ানমারকে চাপ দিতে চান গুতেরেস

এবিএনএ : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের মুখে দেশটি থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যেন তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে সেজন্য মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চান জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস। এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।সোমবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব এ আহ্বান জানান। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান রাজনৈতিক উপায়েই করতে হবে আর সেটা মিয়ানমারকেই দায়িত্ব নিয়ে করতে হবে বলে মন্তব্য করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বলেন, ‘রোহিঙ্গা যেন তাদের ভূমিতে ফিরে যেতে পারে সেজন্য মিয়ানমারকে দায়িত্ব নিতে হবে। এ বিষয়ে তাদের রাজনৈতিক সমাধান ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। মিয়ানমার সরকারকে রাখাইনে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে পারে।’ ‘শুধু তাদের সেখানে নিলেই হবে না, তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।’

জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- নিরপত্তা পরিষদ যেখানে দ্বিধাবিভক্ত, সেখানে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে কে? সুবিচারই বা নিশ্চিত করা হবে কীভাবে। জবাবে গুতেরেস বলেন, `অনেক বিষয়েই তাদের ভেতরে বিভক্তি আছে। মিয়ানমার ইস্যুতেও আছে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে অনুরোধ করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পরিবেশ তৈরির প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদ ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে বলেই আমি মনে করি।’আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কাছে মিয়ানমারের পর্যবেক্ষণ না পাঠানোর বিষয়ে গুতেরেস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) বাংলাদেশ তাদের মতামত দিয়েছে। কিন্তু তারা (মিয়ানমার) দেয়নি। তারা যেন এটা জমা দেয় সেজন্য একটি প্রয়াস চলছে।’ গত ২১ জুন  আইসিসির প্রাক-বিচারিক শুনানিতে তিন সদস্যের আদালত মিয়ানমারকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে পর্যবেক্ষণ দিতে বলেছে। আইসিসির সদস্য না হওয়ায় ওই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি মানতে রাজি নয় মিয়ানমার। যৌথ এ সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমও ছিলেন। বিপদের সময়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় তিনি বাংলাদেশ সরকার এবং এ দেশের মানুষের প্রশংসা করেন। বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাংলাদেশ যা দেখিয়েছে, সেটা সারা বিশ্বকে নাড়া দেওয়ার মত। আজ আমি সেখানে গিয়ে বিষয়টি খুব কাছ থেকে দেখেছি।’ এ সময় বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম তার বক্তব্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে ৪৮ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার। আশির দশক থেকেই সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশের দিকে ছুটে এসেছে রোহিঙ্গারা। তবে গত বছরের আগস্টের সেনা অভিযানের মুখে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে গোটা বিশ্বই উদ্বেগ জানিয়েছে। জাতিসংঘ প্রথম থেকেই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। এই জনগোষ্ঠীর সহায়তায় এগিয়ে এসেছে সবাই। সেই সঙ্গে তাদেরকে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত আছে। তবে মিয়ানমান নিজ দেশের মানুষদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে টালবাহানা করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি চুক্তি করার পরও প্রত্যাবাসন শুরু করছে না তারা।

Share this content:

Back to top button