এবিএনএ: সারাদিন বাইরে কাজ করে বাসায় ফিরে দ্রুত গোসল করে, জামাকাপড় পরে, খাবার খেয়ে, দাঁত ব্রাশ করে ভেজা চুলে বিছানায় শুয়ে পড়েন? কিন্তু আপনি ভেজা চুল নিয়ে ঘুমানোর ঝুঁকির কথা কখনো ভেবেছেন? যদি না ভেবে থাকেন, তাহলে এ বিষয়ে আজই জেনে নিন। ভেজা চুল নিয়ে বিছানায় যাওয়া আপনি যতটা ক্ষতিকারক নয় ভাবছেন আসলে তেমনটা নয়।
ভেজা চুল নিয়ে ঘুমানোর প্রথম নেতিবাচক ফলাফল হচ্ছে, আপনি অনুমানও করতে পারবেন না যে আপনার ভেজা চুল সকালে কেমন দেখাবে। সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত জে. রাসেল সেলুনের হেয়ারস্টাইলিস্ট ওলতা জিলবার্ট বলেন, ‘যদি আপনি রাতে ভেজা চুল নিয়ে ঘুমানোর পর সকালে হেয়ারস্টাইল করতে চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি সম্ভবত উশকো খুশকো বা বিশৃঙ্খল বা কুঁচকে যাওয়া চুলকে স্টাইল করতে সমস্যায় পড়বেন।’ তিনি যোগ করেন, ‘যদি আপনি চুল না শুকিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন, তাহলে আপনার চুলকে সঠিজভাবে শুকানো ও নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সকালে আবার ভেজানোর প্রয়োজন হতে পারে। এটি সকালের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট করে।’
জিলবার্ট বলেন, ভেজা চুল নিয়ে ঘুমানো খুব শিগগির আপনার হেয়ার ফলিকল বা চুলের গ্রন্থি বা শ্যাফটকে ড্যামেজ করবে এমনটা নয়, কিন্তু এটি নিশ্চিতভাবে চুল ভেঙে যাওয়া বা চুল ছিঁড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে, কারণ চুল তখনই সবচেয়ে দুর্বল যখন তা ভেজা থাকে- তখন চুল অধিক নমনীয় হয় এবং সহজে ভেঙে পড়ে। তিনি আরো বলেন, ‘যদি আপনার ভেজা চুলে টাইট করে পনিটেইল বা বেণী করেন, তাহলে রাতে চুল ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর।’
যদি আপনি সকালে কাজের জন্য তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে জেগে উঠতে ভেজা চুল নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন, তাহলে চুলের ড্যামেজ কমানোর কিছু সহজ উপায় রয়েছে। প্রথমত, আপনি কটনের বালিশের কভারের পরিবর্তে সিল্ক বা সাটিনের কভার বেছে নিন। সিল্কের কভারের সারফেসের মসৃণতা তুলনামূলক বেশি, যার সঙ্গে ভেজা চুলের ঘর্ষণ কম হবে, এর ফলে আপনার চুল ততটা ভাঙবে না। আপনার চুলকে ড্যামেজ করতে পারে এমন একটি রাতের অভ্যাস হলো, সিল্কের বালিশের কভার ব্যবহার না করা।
দ্বিতীয়ত, টাইট বেণী বা পনিটেইলের পরিবর্তে লুজ বেণী বা পনিটেইল নিয়ে ঘুমানো নিশ্চিত করুন। এছাড়া আপনার টাইট ও ইলাস্টিক ব্যান্ডের পরিবর্তে সফট স্ক্রাঞ্চি ব্যবহার করা উচিৎ, যা রাতে চুলে তেমন একটা টান ফেলবে না। এছাড়া আপনার ইচ্ছে হলে সিল্কের স্কার্ফ দিয়ে চুলকে মোড়াতে পারেন- এটিও খুব সহায়ক হতে পারে, কিন্তু কম স্বস্তিকর।
পরিশেষে, ভেজা চুল নিয়ে ঘুমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হলো চুলে প্রোডাক্টের ব্যবহার এড়িয়ে না যাওয়া। কন্ডিশনার, প্রোটেক্টিভ সিরাম, ড্রাই অয়েল ও টেক্সচারাইজিং মাউসেস হলো কিছু সর্বোত্তম উপায় যা আপনার চুলের অবস্থাকে খারাপ করবে না এবং মূল্যবান চুলকে ড্যামেজ থেকে রক্ষা করবে। এখন আপনি জানলেন যে ভেজা চুল নিয়ে ঘুমানো কতটা অপকারী, তাই আপনার করণীয় আপনিই বিবেচনা করুন।