জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

এবারও বিধিনিষেধের মধ্যেই কাটছে ঈদ

এবিএনএ : দেশব্যাপী মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে আজ (শুক্রবার)। এক মাস রোজা রাখার পর আজ খুশি, আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের দিন। তবে করোনাভাইরাসের কারণে নানান বিধিনিষেধের মধ্যে ঠিক যেন পূর্ণতা পাচ্ছে না ঈদের আনন্দ। বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় অনেকে সেখান গিয়েও ফিরে যাচ্ছেন মন খারাপ করে।

জাতীয় ঈদগাহ মাঠ, ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়াসহ কোনো মাঠেই ঈদের বড় জামাত হয়নি। বিধিনিষেধ মেনে মসজিদেই পড়তে হয়েছে ঈদের নামাজ। বিধিনিষেধ ছিল কোলাকুলি ও করমর্দনের উপরও। রাজধানীর রাস্তাঘাট আজ মোটামুটি ফাঁকা। ঈদ নামাজের পর নতুন জামা পরে বাসায় বাসায় যাওয়া বা আগত অতিথিদের খাবার পরিবেশনের সেই চিরচেনা দৃশ্যও ছিল সীমিত।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ রোধে দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ দেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। এ কারণে অন্যান্য বছর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় মানুষের ঢল নামলেও এবার তা হয়নি। তবে বিষয়টি জানা না থাকায় সেখানে আজ অনেকেই গিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

শুক্রবার (১৪ মে) সকাল ৮টার পর থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দেখা যায়, চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসে বন্ধ দেখে অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। চিড়িয়াখানা-জাদুঘরের মতো বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় হাতিরঝিল, সংসদ ভবনের সামনের উন্মুক্ত স্থানের মতো জায়গাগুলোতে মানুষের ভিড় আস্তে আস্তে বাড়ছে।

বায়তুল মোকাররমে এবার ঈদুল ফিতরের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামাতে হাজারো মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। নামাজ শেষে খুতবা পেশ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত। মোনাজাতে করোনাভাইরাস থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে এবং ফিলিস্তিনসহ সারা পৃথিবীর মানুষকে হেফাজতের জন্য দোয়া করা হয়।

এরপর ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলার প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১১টার দিকে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এ বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগরী শাখা।

অন্যদিকে পরিবার ও আত্মীয়দের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঈদের দিনও গ্রামের উদ্দেশে ছুটছেন অনেকে। সকালে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা যায়, অনেকেই টার্মিনালে আসছেন। এখান থেকে কেউ পাটুরিয়া ফেরিঘাট, কেউ টাঙ্গাইলের পাকুটিয়া, নাগরপুর পর্যন্ত বাসে যেতে পারছেন। অনেকে উত্তরবঙ্গের গাড়ি না পেয়ে সাভার পর্যন্ত বাসে যাচ্ছেন।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। এর আগে সকালে বঙ্গভবনের দরবার হলে পরিবারের সদস্য এবং নির্দিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়েন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সাধারণত ঈদের দিনে বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রপ্রধান। তবে করোনার কারণে এবার সে আয়োজন বন্ধ।

তবে বরাবরের মতো যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঈদুল ফিতরের দিন শহীদ পরিবার ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফল ও মিষ্টান্ন প্রেরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, ঈদের দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের ঈদ শুভেচ্ছা জানান এবং রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে (মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১) বসবাসরত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফল ও মিষ্টান্ন প্রেরণ করেন।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button