ফিচার

ভাড়াটিয়াদের তথ্য গোপন

এ বি এন এ : গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় অংশ নেওয়া জঙ্গিদের বাড়ি ভাড়া দেওয়ার অভিযোগে দুই বাড়ির মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই জঙ্গিদের অনেকে ঝিনাইদহেও বাড়ি ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছিল। শোলাকিয়ায়ও জঙ্গিদের বাড়ি ভাড়া নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কোথাও তাদের কোনো তথ্য রাখা হয়নি। এসব খবর জনমনে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বাড়ি ভাড়ার আয়ে অনেকের সংসার চলে। কিন্তু কাকে বাড়ি ভাড়া দেওয়া হচ্ছে সে সম্পর্কে বাড়িওয়ালাদের অনেকেই সতর্ক নন। রাজধানীতে ভাড়াটিয়াদের ব্যাপারে তথ্য দিতে বাড়ির মালিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। বাড়ির মালিকদের একটি ফরমও দেওয়া হয়েছিল। তখন অনেকেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পুলিশের এখতিয়ার নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, যাকে-তাকে বাড়ি ভাড়া দিলে বাড়ির মালিকদেরই বিপদে পড়তে হচ্ছে। সবাই যে ইচ্ছাকৃতভাবে জঙ্গিদের বাড়ি ভাড়া দিয়েছেন তা নয়। কিন্তু ভাড়াটিয়াদের সব তথ্য বাড়ির মালিকদের কাছে থাকা দরকার। দেশে যখন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র আছে তখন ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য পেতে অসুবিধা কোথায়? ভাড়াটিয়া সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশের কাছেও তথ্য দিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বাড়ির মালিকরা কোনো তথ্য পুলিশকে দিতে গিয়ে যেন বিড়ম্বনার শিকার না হন সেদিকেও পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে। এ ব্যাপারে প্রতিটি থানায় নতুন একটি হেল্প ডেস্ক খোলা যেতে পারে, যেখানে বাড়ির মালিকরা তাঁদের নতুন ভাড়াটিয়াদের তথ্য সরবরাহ করবেন। এটা এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে, যাকে-তাকে বাড়ি ভাড়া দেওয়া যাবে না। জঙ্গিরা বাসা ভাড়া নিয়ে নিভৃতে তাদের পরিকল্পনা করতে পারে। অস্ত্রের গুদাম বা বোমা তৈরির কারখানাও বানাতে পারে। রাজধানীর বাইরে গড়ে তুলতে পারে অজ্ঞাতবাস। যেমন ঘটেছে ঝিনাইদহে। গুলশান ও শোলাকিয়ায় নিহত দুজন হামলাকারী ঘটনার আগে ঝিনাইদহের একটি মেসে অবস্থান করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।  আমরা আশা করব, এখন বাড়ির মালিকরা সচেতন হবেন। ভাড়াটিয়াদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে কাউকে বাড়ি ভাড়া দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বাড়ির মালিকদের তথ্য সংগ্রহে আন্তরিক হবে—এমনটাই প্রত্যাশিত। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button