
এবিএনএ : আগামী এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কোনো সামরিক বা প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে তা আত্মঘাতী এবং জাতীয় স্বাধীনতাবিরোধী হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি।
দলটি বলছে, দাসত্বের শৃঙ্খলে বাধার যেকোনো চুক্তি জনগণ, রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠন প্রতিহত করবে। বুধবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির এ অবস্থানের কথা জানান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ ব্রিফিংয়ে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য্ ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুবুল ইসলাম হাবিব, এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক চুক্তি হলে তা হবে আত্মঘাতী এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী। এ ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে তা দেশের জনগণ কোনোদিন মেনে নেবে না, বরং তা প্রতিরোধে সর্বশক্তি দিয়ে এগিয়ে আসবে। তিনি বলেন, চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেনার পর ভারত প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে বেশি করে চাপ প্রয়োগ করছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক বিষয় অমীমাংসিত থাকলেও প্রতিরক্ষা চুক্তি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, আমরা আগেই বলেছি, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক চুক্তি হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে কি না, তা নিয়ে দেশের মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিরক্ষা চুক্তি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব জড়িত। এই চুক্তির বিষয়ে আজ দেশের মানুষ চরমভাবে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে ভারতের প্রধান চাহিদা প্রতিরক্ষা চুক্তি। এ ছাড়াও আরো দুই ডজন চুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে। তবে জনগণকে অবহিত না করে কোনো গোপন চুক্তি কেউ মেনে নেবে না, বাস্তবায়নও হতে দেবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মুখপাত্র। সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্স অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)- এর বিরুদ্ধে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ভূমিকা পালনের অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তি এবং বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে ‘র’ সব সময় নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।
সম্প্রতি ‘র’ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বক্তব্যের ব্যাপারে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হঠাৎ ভারতবিরোধী বক্তব্য দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেছেন, ২০০১ সালে ভারতের র এবং যুক্তরাষ্ট্র মিলে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। হঠাৎ করে তার এই ধরনের উক্তি রহস্যজনক। এটি একটি পাতানো খেলারই অংশ। কেননা ‘র’ কাদের স্বার্থে কাজ করে জনগণ ভালো করেই জানে। তাই হঠাৎ করে তার ‘র’এর বিরোধিতা যে তামাশারই অংশ তাতে জনগণের মধ্যে কোনো সংশয় নেই।
Share this content: