জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাস

এবিএনএ : জাতীয় সংসদে আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। এটি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রথম বাজেট। আর আওয়ামী লীগ সরকারের টানা এগারতম। জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ রোববার সংসদ অধিবেশন শুরু হয় সকাল ১০টায়। এরপর বাজেটের ওপর আলোচনায় বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা ৪৮৪টি ছাঁটাই প্রস্তাব এবং ৫৯টি দাবি উত্থাপন করেন।

চারটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মঞ্জুরি দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচানা হয়। পরে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এরপর দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজেট পাস করার জন্য অর্থমন্ত্রী তা উপস্থাপন করেন। পরে সংসদে কণ্ঠভোটে বাজেট পাস করা হয়। এ সময় সরকার দলীয় সাংসদরা টেবিল চাপড়ে অর্থমন্ত্রীকে সমর্থন ও স্বাগত জানান। আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন এ বাজেট কার্যকর হবে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য সংযুক্ত তহবিল থেকে ছয় লাখ ৪২ হাজার ৪৭৮ কোটি ২৭ লাখ ২০ হাজার টাকার নির্দিষ্টকরণ বিল পাস করা হয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের শুরুতেই মঞ্জুরি দাবিতে আলোচনা করার কথা জানান। সরকার, বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা এসব দাবিতে আলোচনা করেন।

গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের: সময় এখন বাংলাদেশের’ শীর্ষক ২০১৯-২০ অর্থবছরের পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০  কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ব্যয় মেটাতে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ আয় হবে তিন লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। আয় ও ব্যয়ের ফারাক ঘাটতি থাকবে (অনুদানসহ) এক লাখ ৪১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া এ ঘাটতির পরিমাণ হবে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে কর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে তিন লাখ ৪০ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর কর রাজস্ব তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, এনবিআরবহির্ভূত কর রাজস্ব হচ্ছে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কর ব্যতীত আয় হবে ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ আগামী বছরে দাঁড়াবে চার হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। সামগ্রিক ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে নেওয়া হবে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়া হবে ২৭ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে তিন হাজার কোটি টাকা।

নির্দিষ্টকরণ বিল পাস

আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যয়ের বাইরে সরকারের বিভিন্ন ধরনের সংযুক্ত তহবিল থেকে ছয় লাখ ৪২ হাজার ৪৭৮ কোটি ২৭ লাখ ২০ হাজার টাকার নির্দিষ্টকরণ বিল কণ্ঠভোটে পাস করা হয়।

মঞ্জুরি দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাব

আগামী অর্থবছরের বাজেটের ওপর সংসদে উত্থাপিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খাতের ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা ৪৮৪টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন। এর মধ্যে চারটি মন্ত্রণালয়ের বিপরীতে আসা দাবিগুলো আলোচনার জন্য গৃহীত হয়। বাকি প্রস্তাবগুলো কোনো আপত্তি ছাড়াই সরাসরি কণ্ঠভোটে পাস হয়ে যায়।

বাজেট পাস হওয়ার পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল স্পিকারের অনুমতি নিয়ে দাঁড়িয়ে সংসদ সদস্য ও সংশ্লিষ্টদের রোববার সন্ধ্যায় বাজেটোত্তর নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান। সংসদের বৈঠক আগামী ৭ জুলাই বিকেল ৫টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

Share this content:

Back to top button