আমেরিকা

‘বিশ্বকে নয়, আমেরিকাকে প্রতিনিধিত্ব করাই আমার কাজ’

এবিএনএ : নিজ দেশের নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেওয়ার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও মহান করে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছেন, সারা বিশ্বকে নয়; আমেরিকাকে প্রতিনিধিত্ব করাই তাঁর কাজ। মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল হিলে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া প্রথম বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, দিনের পর দিন যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের নিরাপত্তা দিয়েছে, অন্য দেশ পুনর্গঠন করেছে। কিন্তু নাগরিকদের প্রতি আগের প্রশাসনগুলো উদাসীন থেকেছে। নিজেদের সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিয়ে অন্যদের সীমান্ত রক্ষা করেছে। এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না। মুসলিম জঙ্গিদের দমন করা হবে। অভিবাসন নীতি সংস্কার করা হবে। অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন করা হবে। আমেরিকা শান্তি চায়, অন্য দেশকে আমেরিকার এই চাওয়ার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে।

ঐতিহাসিক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার নাগরিকদের জন্য ব্যাপক কর রেয়াতের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি ওবামা কেয়ার বাতিল করে নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা সহজলভ্য করার ঘোষণা দেন তিনি।

গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর চরমভাবে বিভক্ত রাজনৈতিক বাস্তবতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার রাতে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে অাশার কথাই শুনিয়েছেন। হিংসা ও বিদ্বেষের পরিবর্তে ঐক্য ও সংহতির কথা বলেছেন। যেসব কথা বলে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন বক্তব্যে সেসব বিষয়কে তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন।

অধিবেশনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানান স্পিকার পল রায়ান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেনস। কংগ্রেস সদস্য, বিচারপতি, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমন্ত্রিত অতিথিরা দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্টকে সম্ভাষণ জানান। ডোনাল্ড ট্রাম্প ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও অধিবেশনে কক্ষের উপস্থিত সবাইকে সম্বোধন করে বক্তব্য শুরু করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অন্য দেশ থেকে আমেরিকায় যখন পণ্য আসে, তখন অনেক সময় কর আরোপ করা হয় না বা নামমাত্র কর আরোপ করা হয়। অথচ আমেরিকা যখন বাইরের দেশে পণ্য রপ্তানি করে, তখন অতিরিক্ত কর অারোপ করা হয় বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে। বাণিজ্যের এ ভারসাম্যহীনতা আর চলতে দেওয়া যাবে না। মুক্ত বাণিজ্যের প্রতি আমরা যেমন শ্রদ্ধাশীল, অন্য দেশকেও একইভাবে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।’

অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, অবৈধ অভিবাসী ও অপরাধীদের শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। অভিবাসী অপরাধীদের জন্য পৃথক দপ্তর খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। কানাডা ও অন্যান্য দেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ওই সব দেশে মেধাভিত্তিক অভিবাসন হওয়ায় দেশগুলো লাভবান হচ্ছে। কিন্তু পুরোনো অভিবাসন নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অদক্ষদের অনুপ্রবেশ ঘটছে, এতে করে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মেধা-ভিত্তিক অভিবাসন নীতি প্রণয়নের জন্য তিনি কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানান। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের ঐক্যের মধ্যে দিয়ে সময় উপযোগী অভিবাসন নিশ্চিত সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আট থেকে নয় বছর পর আমেরিকার স্বাধীনতার ২৫০ বছর পালিত হবে। সে দিনটিতে দাঁড়িয়ে আমরা আজকের দিনটাকে ঘুরে দাঁড়ানোর দিন হিসেবে দেখব। আমরা অনেক যুদ্ধ দেখেছি, এখন শান্তি চাই।’ ২৫০তম স্বাধীনতা দিবসে আমেরিকাকে শান্তিময় ও ন্যায়ভিত্তিক আমেরিকা হিসেবে দেখা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। জাতির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা একই পতাকা, একই রক্ত ধারণ করি; তাই আমরা ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমেরিকাকে মহান করে তুলব।’

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button