
এবিএনএ : অসুস্থ-কর্মক্ষম স্বামী, পূত্র সন্তান নেই, দুই মেয়েকে গরীব ঘরে বিয়ে দিয়ে কোন রকমে কূল করেছেন। বয়সের ভারে নিজেরও চলাফেরা করা কঠিন। তবুও জীবিকার প্রয়োজনে কাকডাকা ভোরে মানুষের কাছে সাহায্যের জন্য বেড়িয়ে পড়তেন আশুগঞ্জ উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর ভিক্ষুক পুনবার্সন কর্মসূচির আওতায় একটি কাঁচামালের দোকান পেয়ে দুর্দশা লাঘবের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
জানা যায়, উপজেলার আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ছিলেন ফাতেমা বেগম। বিগত ২০০৩ সালে উক্ত ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ষাটোর্ধ্ব সাবেক এই জনপ্রতিনিধি এক সময় মানুষকে দু’হাত ভরে সহযোগিতা করেছেন। নিয়তির নির্মম পরিহাসে এখন তিনিই জীবন চালাচ্ছিলেন মানুষের দয়ায় । ফাতেমা বেগম জানান, মেম্বার থাকাকালীন সময়ে তিনি জনগণের জন্য কাজ করেছেন। তখন স্বামী রোজগার করায় পরিবার নিয়ে ভাবতে হয়নি তাকে।
কিন্তু, গত কয়েক বছর ধরে তার স্বামী দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়াসহ শারিরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে দুই কন্যা সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাদের। কোন রকমে দুই মেয়েকে বিয়ে দিলেও বুড়া-বুড়ির সংশার চলা কঠিন হয়ে পড়েছিল। সম্পদ বলতে একটুকরো জায়গায় চোট্ট একটি ভাঙ্গা ঘর ছাড়া কিছুই নেই। তাই বাধ্য ভিক্ষাবৃত্তিকেই বাঁচার উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন সাবেক এই জনপ্রতিনিধি। কোন কোন সময় পরিচিতজনদের দেখলে লজ্জায় মুখ ডাকলেও অভাবের কাছে যেন সবই হার মানত তার কাছে। বিষয়টি আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নজরে আসলে প্রধানমন্ত্রীর ভিক্ষুক পুনবার্সন কর্মসূচির আওতায় নির্মিত পুনবার্সন শেডে তাকে একটি কাঁচামালের দোকান দিয়ে দেয়া হয়।
এতে মহাখুশি ফাতেমা ও তার কর্মক্ষম স্বামী তাজুল ইসলাম। এজন্য তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজিমুল হায়দারকে ধন্যবাদ জানাবার পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রাণভরে দোয়া করছেন। ফাতেমা জানান, সুযোগ থাকতে মানুষের জন্য কাজ করেছি। সরকারের কাছে শেষ জীবনে এসে এটি আমার শ্রেষ্ঠ পাওনা। আর মানুষের কাছে হাত পাততে হবেনা এটাই আমাদের মনের প্রশান্তি। এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজিমুল হায়দার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বদান্যতায় পরিস্থিতির শিকার এই মানুষগুলির যদি পুনবার্সন হয় তাহলেই এই প্রচেষ্টা স্বার্থক হবে। তিনি ভিক্ষুক পুনর্বাসনে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
Share this content: