খেলাধুলা

জয়ই মাশরাফির বিদায়ী উপহার

এবিএনএ : ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাকিব আল হাসানের উইকেট। এক ওভার পর সাকিবের আবার আঘাত। মুস্তাফিজের পরপর দুই উইকেট। প্রত্যেকে উইকেট নিচ্ছেন আর মাশরাফির মুখের হাসিটা চওড়া হচ্ছে।
শেষ অবধি তরুন সফিউদ্দিনের বলে শেষ উইকেটের পতন হলো শ্রীলঙ্কার। এ যেনো এক প্রতীক। মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচে তরুনদের হাত ধরে এলো জয়।
হ্যা, মাশরাফির জন্য একটা জয় নিয়ে তবেই মাঠ ছাড়লো বাংলাদেশ দল। গতকাল মাঠে নামার আগেই খেলোয়াড়রা বলেছিলেন, মাশরাফিকে বিদায়ী উপহার   হিসেবে জয় দিতে চান তারা। সেই কথা রেখেছেন সকলে। ব্যাটে-বলে শ্রীলঙ্কাকে গুড়িয়ে দিয়ে তুলে নিয়েছেন ৪৫ রানের জয়।
মার্চ মাসের ২ তারিখে মুরাতোয়ায় অনুশীলন ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছিলো বাংলাদেশের দীর্ঘ শ্রীলঙ্কা সফর। এরপর দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টির লম্বা লড়াই চলেছে। জয়-পরাজয়ে রচিত হয়েছে আনন্দ-বেদনার কাব্য। কলম্বো টেস্ট ও ডাম্বুলায় প্রথম ওয়ানডে জিতে বাংলাদেশ ড্র করেছে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ। এর মধ্যে নানারকম নাটকীয়তার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বড় নাটকীয়তা ছিলো গত টি-টোয়েন্টির টসের সময় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার এই ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়া। অবশেষে গতকাল একটি জয়ের ভেতর দিয়েই শেষ হলো দীর্ঘ এই সফর।
আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৭৬ রান তুলে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। সেই ভিতের ওপর দাড়িয়ে বোলাররা জেতালেন ম্যাচ। বিশাল এই স্কোর তাড়া করতে গিয়ে কখনোই লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের থিতু হতে দেননি সাকিব-মুস্তাফিজরা।
ব্যাট হাতে ৩৮ রান করার পর বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে অবশ্যই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় সাকিব। তবে পরপর দুই বলে দুটিসহ মোট ৪ উইকেট নেওয়া মুস্তাফিজের কীর্তিটাও ফেলে দেওয়ার নয়।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশকে বিস্ফোরক একটা সূচনা এনে দেন সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস।
তামিমের বদলে গতকাল ইনিংস শুরু করতে সৌম্যর সঙ্গী হন ইমরুল। দু জনে মাত্র ৬.৩ ওভারে ৭১ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। পাওয়ার পে­র ৬ ওভারেই তুলেছেন ৬৮। বাংলাদেশের আগের সেরা উদ্বোধনী জুটি ছিল তামিম ইকবাল ও এনামুল হকের ৬৩, নেপালের বিপক্ষে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
সৌম্য ও ইমরুল আউট হয়ে যান পরপর দুই ওভারে। সৌম্য ১৭ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো ৩৪ রান এবং ইমরুল ২৫ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজানো ৩৬ রান করে ফেরেন। এরপরও আগ্রাসনটা ধরে রেখেছিলেন সাকিব ও সাব্বির। ১০ ওভারে বাংলাদেশ তুলে ফেলে ওই ২ উইকেটে ১০১ রান।
পরের ১০ ওভারে আর বাংলাদেশ ৭৫ রানের বেশী তুলতে পারেনি। যদিও সাকিব এই মাঝের ওভারগুলোতেও দারুন ক্রিকেট খেলে ৩১ বলে ৩৮ রান করেন। কিন্তু মোসাদ্দেক ও মুশফিক দারুন শুরু করেও বেশী দূর যেতে পারেননি। আর রিয়াদ সেভাবে শুরুই করতে পারেননি।
পরের ১০ ওভারে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার চেয়ে বড় হয়ে ওঠে শ্রীলঙ্কান বোলারদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং। ডেথ ওভারের খ্যাতিমান বোলার লাসিথ মালিঙ্গা এই ম্যাচে শেষ দিকে স্বরূপে ফেরেন। ইনিংসের শেষ তিন বলে মাশরাফি, মিরাজ ও সাইফুদ্দিনকে আউট করে তুলে নেন হ্যাটট্রিক।
আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে এটি ছিলো মালিঙ্গার চতুর্থ হ্যাটট্রিক। এর আগে তিনটি ওয়ানডে হ্যাটট্রিক করেছিলেন মালিঙ্গা। এর মধ্যে ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পরপর চার বলে চার উইকেটও আছে।

Share this content:

Back to top button