
এবিএনএ: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে অনেক ঘটনা ঘটবে বলে জানিয়ে গিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, অনেক মেরুকরণই ঘটবে এর মধ্যে। কী কী ঘটবে, সেটা জানার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে। মঙ্গলবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে দেখা করার প্রসঙ্গে নানা প্রশ্নে এই কথা বলেন। কাদের বলেন, ‘ইলেকশন যতই ঘনিয়ে আসবে ততই দৃশ্যপটের মধ্যে কিছু কিছু পরিবর্তন আসবে। ইলেকশনের শিডিউল (নির্বাচনের তফসিল) অ্যানাউন্স (ঘোষণা) হয়ে গেলে এব্যাপারে পোলারাইজেশনটা (মেরুকরণ) স্বাভাবিক ব্যাপার।’ ‘আমাদের এখানে পোলারাইজেশনটা কীভাবে হবে সেটা দেখার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’ আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন ধরে আগাচ্ছে সরকার। আর ভোটের আগে বিএনপি জাতীয় ঐক্য গড়তে বিভিন্ন দলের সঙ্গে যেমন আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, তেমনি জোটের আকার বাড়াতে উদ্যোগী আওয়ামী লীগও। এর মধ্যে বামপন্থী আটটি দল মিলে নতুন জোট গড়ে তুলেছে। ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন দলগুলোরও জোটবদ্ধ হতে আলোচনার হওয়ার খবর আসছে সংবাদ মাধ্যমে। আবার ধর্মভিত্তিক কিছু দল আওয়ামী লীগের সঙ্গেও সম্পর্ক চাইছে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে এক হয়ে লড়াই করা আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি আর জোটে না থাকলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ভোটে আসলে আবার আওয়ামী লীগ-জোতীয় পার্টির জোটবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনার কথাও বলছেন দল দুটির নেতারা। কাদের বলেন, ‘আমাদের এখানে সাম্প্রদায়িকতা একটা ব্যাপার আছে, এখানে ডিভাইসিক পলিটিক্স আছে, সেখানে পোলারাইজেশনটা কার সঙ্গে কার হবে, কীভাবে ঘটবে, এইসব বিষয়গুলোর সমীকরণটা একটা পর্যায়ে কোথায় দাঁড়াবে, সেটা এখনে বলা যাবে না।’
সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে সাক্ষাতে এই রাজনৈতিক মেরুকরণের কোনো বিষয় ছিল না বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ‘অফিসিয়াল আলাপ নয়, জাস্ট এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ।’
‘রাজনীতির অংক নিয়ে আলাপ করতে যাইনি। যদি কোনো আলাপ করতে যাই তাহলে আমার পার্টির সভাপতির সাথে কথা বলে যাব এবং ওয়ার্কিং কমিটির সাথে কথা বলে যাব।’ ‘রাজনীতির কোনো বিষয়ে আলোচনা করলে, কোনো ইকুয়েশন (সমীকরণ) বা আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের (বোঝাপড়া) ব্যাপার, অ্যালায়েন্সের (জোট) ব্যাপারে আলাপ হলে, এটা দলীয় সিদ্ধান্ত ছাড়া আমি আলাপ করতে পারি না।’ ‘আমি বাসদের খালেকুজ্জামানের সাথেও ফোনে কথা বলেছি। আমি ফোনে কাদের সিদ্দিকী সাহেবের সাথেও কথা বলেছি। ওনি গতকাল আমাকে কল করেছিলেন কিন্তু খেয়াল করতে পারিনি। আজকে তাকে কল করেছি, কথা বলেছি।’
‘এটা একটা সৌজন্যবোধের ব্যাপার। একটা ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ রাজনীতিতে থাকা উচিত।’ বিএনপির মির্জা ফখরুল সাহেবের মায়ের মৃত্যুতে বিবৃতি ও ফোন করে কথা বলার বিষয়টি তুলে কাদের বলেন, ‘রাজনীতিতে সৌজন্যবোধটা দরকার আছে। কর্নেল অলিও আমাকে ফোন করেছেন। আ স ম আব্দুর রবও আমাকে ফোন করেছেন। মেজর মান্নানও করেছেন। এভাবে ফোনালাপটা থাকলে অনেক কিছুই সমাধান হয়ে যায়।’
বিএনপির ভারত ‘বিদ্বেষ’ দলটির ‘ছদ্মবেশ’ বলেও উল্লেখ করেন কাদের। বলেন, ‘এই ছদ্মবেশী বিদ্বেষপ্রসূত নেতিবাচক রাজনীতির কারণে আগামী নির্বাচনে বিএনপির পরাজয় হবে এবং আগামী নির্বাচনে মাশুল দিতে হবে।’ অন্য এক প্রশ্নে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘ভারত ভীতিটা যাদের এতো প্রবল, ইলেকশন এলে ভারতপ্রীতি কেন বেড়ে যায়? যারা সারা বছরই ভারতভীতিতে ভোগে ইলেকশন এলেই তাদের ভারত প্রীতি কেন?’ ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত কাউকে ক্ষমতায় বসাবে এটা আমরা বিশ্বাস করি না। এজন্য আমরা তোষামোদিও করি না।’ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভারত সফর নিয়ে জানতে চাইলে অবশ্য কোনো জবাব দিতে চাননি কাদের। বলেন, ‘এটা এরশাদ সাহেবকেই জিজ্ঞেস করেন।’
Share this content: