বাংলাদেশরাজনীতিলিড নিউজ

বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে এ দেশ স্বাধীন হতনা : বাণিজ্যমন্ত্রী

এবিএনএ : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ (এমপি) বলেছেন, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবুর রহমানের জন্ম না হলে এ দেশ স্বাধীন হতনা। বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নেতাই ছিলেননা, তিনি ছিলেন বিশ্বের বরেণ্য নেতা।

আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি বিশ্বের মানুষ কি গভীরভাবে আমাদের এই নেতাকে শ্রদ্ধা করত। তার স্বাধীনতার এই স্বপ্ন সেই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হবার পর থেকেই। গতকাল শনিবার সকালে ভোলার উপ-শহর নামে খ্যাত বাংলাবাজার ফাতেমা খানম কলেজে মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেপটপ প্রদাণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান হয়, ১৯৪৮ সালেই তিনি বাংলার স্বাধীনতার বীজ রোপন করেছিলেন। আমাদের ছাত্র প্রতিষ্ঠান ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ৪ঠা জানুয়ারী। ১৯৪৯ সালের ২৩ শে জুন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এবং ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের উম্মেষ ঘটিয়েছিলেন। তারপরে ধীরে ধীরে জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জীবনে ৪ হাজার ৬৮২ দিন কারাগারে ছিলেন।

তার জীবনের চার ভাগের এক ভাগই কারাগারে কাটিয়েছিলেন। তার একপাশে ছিল ফাঁসির মঞ্চ আর অন্যপাশে ছিল প্রধানমন্ত্রীর গদি। তিনি ফাঁসির মঞ্চ বেছে নিয়েছিলেন। ৬ দফা দাবির পরে বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী করে তাকে ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আমরা জাগ্রত ছাত্রসমাজ সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে ১৭ জানুয়ারী থেকে যে আন্দোলন শুরু করেছিলাম ২৪ জানুয়ারী গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে আইয়ুবের সেই ফাঁসির দেওয়ার স্বপ্ন চুরমার করে দেই।

তখন মুজিবকে মুক্ত করার শপথ নেই। উনসত্তরের ২২ শে ফেব্রুয়ারী সেই প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবুর রহমানকে কারাগার থেকে মুক্ত করি। এবং ২৩ শে ফেব্রুয়ারী রেসকোর্স ময়দানে তাকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। ওই গণসংবর্ধনা সভায় তাকে আমি বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করি। এবং ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিলেন সেই ভাষণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণে রুপ নেয়।

আওয়ামী লীগ দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। এগিয়ে যাবে। বিশ্বের উন্নত এগারোটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট জয়লাভ করবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের যে কোন দিন ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, বাংলাদেশ সব দিক থেকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী। এ দেশ এখন উদীয়মান অর্থনৈতিক উন্নয়নের দেশ। আমরা ইতিমধ্যেই নিম্ম মধ্যম আয়ের দেশে প্রবেশ করেছি। দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তরিত হতে চলেছে। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরিত হবো। তখন বাংলাদেশ হবে একটি ভিন্ন বাংলাদেশ। আর ২০৪১ সালে আমরা হবো একটি উন্নত দেশ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, ভোলা-২ আসনের এমপি আলী আজম মুকুল, ডাঃ তাসমিনা আহমেদ জামান (মুন্নী)। কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি মইনুল হোসেন বিপ্লবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তৃতা করেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু, ভোলা পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কাসেম, সাবেক অধ্যক্ষ আফসার উদ্দিন বাবুল, এম ফারুকুর রহমান, রুহুল আমি জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

পরে ৫২ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে লেপটপ প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় কনসার্ট। এতে ঢাকার নামীদামী শিল্পীরা অংশ নেন। মন্ত্রী এর আগে বাংলাবাজার ফাতেমা খানম মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।

Share this content:

Back to top button