খেলাধুলালিড নিউজ

ফাইনালে ভারতকে ৩৩৯ রানের লক্ষ্য দিল পাকিস্তান

এবিএনএ : টসের পর সরফরাজ আহমেদ যখন বলেছিলেন তার দলের লক্ষ্য ৩০০ প্লাস রান করা তখন অনেকেই হয়তো হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। আইসিসির মতো মেগা ইভেন্টে ভারতের বিপক্ষে ৩০০ প্লাস রান করতে পাকিস্তান- সেটি ছিল ভাবনার বাইরে। তবে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা যেন সরফরাজের চাওয়ার চেয়েও ভালো ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন। টপ ও মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মেগা ফাইনালে ভারতকে ৩৩৯ রানের বিশাল চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে টিম পাকিস্তান।

লন্ডনের কেনিংট ওভালে টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বিরাট কোহলি। ফখর জামান ও আজহার আলির মধ্যকার সেঞ্চুরি জুটির ওপর ভর করে মজবুত ভিত পায় সরফরাজের দল। এরপর অন্যান্যদের দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রানের পাহাড় গড়ে পাকিস্তান।
ক্যারিয়ারের চতুর্থ ম্যাচে প্রথম সেঞ্চুরি করা ফখর ১০৬ বলে ১২টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১১৪ রানের ঝলমলে ইনিংস উপহার দেন। তার ওপেনিংয়ের সঙ্গী আজহার রানআউট হওয়ার আগে ৭১ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৫৯ রান করেন। এছাড়া বাবর আজম ৫২ বলে ৪৬ এবং হাফিজ ৩৭ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে করেন রান। ভারতের হয়ে একটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার, হার্দিক পান্ডিয়া ও কেদার যাদব।
বুমরাহর করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ক্যাচ আউট হয়েও ‘নো’ বলের বদান্যতায় বেঁচে যান ফখর। সেই ওভারেই একটি করে চার হাঁকান ফখর ও আজহার। এরপর পাকিস্তানকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের করা অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে দুর্দান্ত ছক্কা হাঁকিয়ে নে আজহার জানান দেন দিনটি হতে যাচ্ছে তাদের।
‘নো’ বলের সুবিধা নিয়ে ফখর বেঁচে যাওয়ার পর ভারতীয় ফিল্ডাররা দুই-দুটি রানআউট মিস করেছেন। আর তাতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় পাকিস্তান। দলীয় ১২৮ রানের মাথায় ফখরের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন আজহার আলি।
তবে আজহার ফেরার পরই যেন আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন ফখর। একসময় ৭৮ বলে মাত্র ৬১ রান ছিল এই পাকিস্তানি ওপেনারের। এরপরই যেন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন ফখর। দুর্দান্ত সব শটস খেলে ৯২ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
সেঞ্চুরির কিছুক্ষণ পর দলীয় ২০০ রানের মাথায় ফখর আউট হওয়ার পরও দমে যায়নি পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে শোয়েব মালিক-বাবর মিলে ৪৭ রানের দায়িত্বশীল জুটি গড়ে দলকে কক্ষপথেই রাখেন।
তবে দলীয় ২৪৭ রানের মাথায় মালিক এবং দলীয় ২৬৭ রানের মাথায় বাবরকে আউট করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালায় পাকিস্তান। তবে পঞ্চম উইকেটে ইমাদ-হাফিজ মিলে ৪৫ বলে ৭১ রানের অবিচ্ছিন্ন দারুণ এক জুটি গড়ে পাকিস্তানকে ঠিকই রানের পাহাড় এনে দেন।
গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দেয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যায় ভারত। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে জিতেই সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় টিম ইন্ডিয়া। সেমিতে বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনালে উন্নীত হয় বিরাট কোহলির দল।
অন্যদিকে ভারতের কাছে হারের ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করে পাকিস্তান। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় টিম পাকিস্তান। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বোলারদের দৃঢ়তায় স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে সফরাজ আহমেদের দল।
হাইভোল্টেজ ম্যাচটিতে দুই দলের খেলোয়াড়দের মানসিক পরীক্ষাও হয়ে যাবে। বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি দর্শকের চাপ থাকবে কোহলি-সরফরাজদের ওপর। সেই চাপকে যারা জয় করতে পারবে তারাই হাসবে বিজয়ীর হাসি।
ভারতীয় একাদশ: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, যুবরাজ সিং, এমএস ধোনি, কেদার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ভুবনেশ্বর কুমার ও জসপ্রিত বুমরাহ।
পাকিস্তান একাদশ: আজহার আলি, ফখর জামান, বাবর আজম, মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিক, সরফরাজ আহমেদ, ইমাদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ আমির, শাদাব খান, হাসান আলি ও জুনায়েদ খান।

Share this content:

Related Articles

Back to top button