আন্তর্জাতিকলিড নিউজ

ফরাসি নির্বাচনে শঙ্কার ছায়া

এবিএনএ : ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে আগামীকাল রোববার। সন্ত্রাসী হামলার ছায়া নিয়ে দেশটির তাৎপর্যপূর্ণ এ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন ১১ প্রার্থী। প্যারিসের চ্যাম্প এলিসিতে গুলিতে এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর পর দেশটিতে রাজনৈতিক বিভাজনও গভীর আকার ধারণ করেছে।

নির্বাচন শুরুর মাত্র ৭২ ঘণ্টা আগে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলার দায় স্বীকারের পর দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিরোধীদের মধ্যেও দেখা গেছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।

রোববার প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণ শুরুর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আইএসের হামলায় পুলিশ কর্মকর্তা জাভিয়ার জাগেল হত্যার ঘটনা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ এনেছেন জনমত জরিপে এগিয়ে থাকা মধ্যপন্থী প্রার্থী এমানুয়েল ম্যাক্রন।

দেশটির কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ফ্রন্টের নেতা ম্যারিন লে পেনের সঙ্গে ম্যাক্রোর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে জরিপগুলোতে। এ দুই প্রার্থীর পরই জরিপে এগিয়ে আছেন ডানপন্থী রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ফ্রাসোয়া ফিলন।

french

চ্যাম্প এলিসির হামলার ঘটনাকে মৌলবাদী ইসলামের সঙ্গে ফ্রান্স লড়াই করছে বলে ম্যারিন লে পেন ও ফিলনের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ দুই প্রার্থী হামলার ওই ঘটনাকে সংঘবদ্ধ, সর্বগ্রাসী ও বর্বর বলে মন্তব্য করেছেন।

শুক্রবার দেশটির প্রসিকিউটররা হামলাকারীর নাম প্রকাশ করেছেন। করিম শেরফি (৩৯) নামের ওই হামলাকারীর বিরুদ্ধে দুটি হত্যাচেষ্টাসহ সহিংস কর্মকাণ্ডের দীর্ঘ অভিযোগ রয়েছে পুলিশের কাছে।

হামলায় নিন্দা প্রকাশ করেছেন পেন। পেনকে সমর্থন জানিয়ে শক্তিশালী প্রার্থী বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বার্তাসংস্থা এপিকে ট্রাম্প বলেছেন, ফ্রন্ট ন্যাশনালের প্রার্থী লা পেন সবচেয়ে শক্তিশালী। ফ্রান্সে যা ঘটতে যাচ্ছে; তাতে পেন শক্তিশালী।

হামলার পরপরই এক টুইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশটির নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে এ হামলা। তিনি বলেন, এ ধরনের আরও হামলার ঘটনা ফরাসি জনগণ মেনে নেবে না।

এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী বার্নার্ড ক্যাজেনুয়েভ। ভয়ের কাছে হেরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফরাসি এই প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন।

France

তিনি বলেছেন, ৫০ হাজারেরও বেশি পুলিশ ও সশস্ত্র পুলিশ এবং ৭ হাজার সেনাবাহিনী রোববারের প্রথম রাউন্ডের ভোটে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। গণতান্ত্রিক এ যাত্রায় কাউকে ব্যাঘাত ঘটানোর সুযোগ দেয়া হবে না।

২০১৫ সালে ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিক শার্লি হেবদোর অফিসে ও প্যারিসে জঙ্গি হামলার পর সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি অব্যাহত রয়েছে ফ্রান্সে। এর মাঝেই পরের বছরের জুলাইয়ে নিসে ট্রাক হামলা চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় দেশটির প্রধান প্রধান পর্যটন স্পটগুলোতে হাজার হাজার সেনা ও সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটাভুটিতে লি পেন এবং ম্যাক্রনের যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি রয়েছে বলে সর্বশেষ জরিপগুলোতে উঠে এসেছে। কিন্তু এ লড়াইয়ে ফিলন এবং কট্টর বামপন্থী প্রার্থ জিন লুস মেলেনকনের সম্ভাবনা রয়েছে; মাত্র ২ থেকে ৩ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছেন তারা।

দেশটিতে চূড়ান্ত পর্বের ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ মে। ওইদিন সবচেয়ে বেশি ভোটপ্রাপ্ত দুই প্রার্থীর মধ্যে একজন দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। এর সাতদিন পর ১৪ মে দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওঁলাদের কাছে থেকে দায়িত্ব নেবেন নির্বাচিত নতুন প্রেসিডেন্ট।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button