জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

ছেলেকে না পেলে প্রাণভিক্ষার সিদ্ধান্ত নয়: মীর কাসেম

এ বি এন এ : ছেলেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে অভিযোগ করে তাকে ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেয়ার কথা জানিয়েছেন মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। দুপুরে মীর কাসেমের পরিবারের নয় জন সদস্য গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কারাগার থেকে বের হয়ে তারা এ কথা জানান।

মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল ও আপিল বিভাগের পর মঙ্গলবার মীর কাসেমে দণ্ড বহাল থাকে রিভিউ আবেদনেও। বুধবার সকালে সে রায় রাতে পড়ে শোনানো হয়। আইন অনুযায়ী প্রাণ বাঁচাতে এখন রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া জামায়াত নেতার কাছে কোন পথ খোলা নেই।

বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে মীর কাসেমের নয় স্বজন কাশিমপুর কারাগারে ঢুকেন। মীর কাসেমের স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন, মেয়ে সুমাইয়া, রাবেয়া ও তাহেরা তাসনিম, পুত্রবধূ শাহেদা তাহমিদা ও তাহমিনা আক্তার এবং ভাতিজা হাসান জামাল ছাড়াও তাদের সঙ্গে ছিল তিন জন শিশু।

এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর বেলা পৌনে চারটার দিকে বের হয়ে আসেন মীর কাসেমের স্বজনরা। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার বিষয়ে জামায়াত নেতা কী সিদ্ধান্ত দিলেন এ বিষয়েই তাদের কাছে জানতে চান গণমাধ্যমকর্মীরা। জবাবে কাসেমপত্নী আয়েশা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে আহমাদ বিন কাসেমকে সাদা পোশাকের পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তাকে না পাওয়া পর্যন্ত আমরা প্রাণভিক্ষা বা অন্য কোনো বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছি না।’

জামায়াতের অভিযোগ মীর কাসেমের ছেলে আহমাদ বিন কাসেমকে গত ১০ আগস্ট মিরপুর ডিওএইচ এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ করছে জামায়াত।  তবে পুলিশ এই অভিযোগ কখনও স্বীকার করেনি। পল্লবী অঞ্চলের সহকারী কমিশনার জাকির হোসেন ঢাকাটামসকে বলেন, ‘কাসেম আলীর ছেলেকে আমরা আটক করিনি, তিনি এখন কোথায় আছেন বা বাড়ি ফিরেছেন কি না, সে বিষয়েও আমরা জানি না।’

মীর কাসেম আলীর স্ত্রীর এই বক্তব্যের পর এই মানবতাবিরোধী অপরাধীর ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে দেরি করলে কী হবে- সে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানও তাদের সিদ্ধান্ত দিতে বিলম্ব করার কৌশল নিয়েছিলেন। তবে তাদেরকে বেশিদিন সুযোগ দেয়া হয়নি। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ম্যাজিস্ট্রেট আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চাইলে আসামিকে একটি না একটি সিদ্ধান্ত দিতেই হবে।

এর আগে সকালে রিভিউ খারিজের রায় আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত নেতাকে পড়ে শোনায় কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ। সে সময় তারা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে খানিকটা সময় চান মীর কাসেম।

প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে একজন আসামি কত সময় পাবেন, সেটা আইনে স্পষ্ট নয়। তবে যুক্তিসঙ্গত সময় দেয়া হয় তাদের। মীর কাসেমের রিভিউ আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছেন, তিনি মনে করেন, যুক্তিসঙ্গত সময় সাত দিন হওয়া উচিত।

Share this content:

Related Articles

Back to top button