আইন ও আদালতলিড নিউজ

আবরার হত্যায় ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মী রিমান্ডে

এবিএনএ: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবির ইয়াসিন আহসান চৌধুরীর আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেছিল।

আবরার ফাহাদকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা বরকতুল্লাহ চকবাজার থানায় যে ১৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন, তাতে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগের এই দশ নেতাকর্মীর নামও রয়েছে। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন এই ১০ আসামি। তারা ঠান্ডা মাথায় খুন করেছেন। এই ১০ আসামি যে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় জড়িত, তা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে। অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার ১০ বুয়েটছাত্রের মধ্যে দুজনের আইনজীবী আদালতে যুক্তি তুলে ধরেন। তবে আদালত যুক্তিতর্ক শেষে আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

রিমান্ডে যাওয়া ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মী হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, দ্বিতীয় বর্ষ), সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, দ্বিতীয় বর্ষ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, তৃতীয় বর্ষ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ), মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, তৃতীয় বর্ষ) এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না।

ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর সোমবার রাতে ১১ জনকে স্থায়ীভাবে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথা জানায় ছাত্রলীগ। তার মধ্যে সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ইফতি মোশাররফ সকাল ও মুনতাসির আল জেমি।

রবিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, ওই রাতেই হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তে তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। এদিকে আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে সোমবার থেকে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button