
এবিএনএ: কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা যেন বিরোধিতা না করেন, তা সরকারপক্ষের আইনজীবীদের বলে দিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলাদল আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই অনুরোধ করেন মওদুদ। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- প্যারোলের আবেদন করলে মুক্তি বিবেচনা করা যায়। আমরা বলতে চাই, যদি প্যারোলের কথাই বলেন, তাহলে আপনার আইনজীবীদের বলে দেন তারা যেন বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিরোধিতা না করে। তাহলে তো তিনি জামিনেই মুক্তি পেতে পারেন। প্যারোলের কোনো প্রয়োজন হবে না।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত হয়ে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি খালেদা জিয়া। কারাগারে থাকাকালীন আরও একটি মামলায় তার সাজা হয়। দুটি মামলায় মোট ১৭ বছরের সাজা হয় বিএনপিপ্রধানের। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যেই তার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি আলোচনায় আসে। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন উঠেছে। সরকারের কারণে কারাগারে থাকা বিএনপি প্রধানের মুক্তি হচ্ছে না দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তার মুক্তি না হওয়ার পেছনে সরকারের কোনো হাত নেই। সরকার চায় না বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হোক, সেটি স্পষ্ট হয়েছে- এমন দাবি করে মওদুদ বলেন, সরকার জানে বেগম জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি, দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে এবং একদলীয় শাসনের অবসান ঘটবে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরে আসবে।
মওদুদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আজকে না হোক কালকে হবে এবং সম্মানের সঙ্গেই তার মুক্তি হবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার প্রধানসহ তাদের নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সময় বলেছেন- বিএনপি থেকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা যেন সংসদে আসেন। তারা সংসদে যাক আর না যাক, সংসদের বৈধতা কখনই অর্জন করা সম্ভবপর হবে না। বিএনপির এই নেতা বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন কোনোক্রমেই এই সংসদকে বৈধতা দেয় না এবং দিতে পারে না। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের কারণে দেশে একটা শূন্যতা বিরাজ করছে। এই শূন্যতা সরকারের জন্য ভয়ঙ্কর, দেশের মানুষের জন্যও ভয়ঙ্কর।
মওদুদ বলেন, জাহিদুর রহমান সংসদে গিয়েছেন, যদি আরও দু-একজন যান সরকারের কি সুবিধা হবে জানি না। তবে দেশের মানুষ জানবে এর কারণে এই সংসদের বৈধতা কখনই আসবে না, আসতে পারে না। কারণ এই সরকার জনগণের প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত হয়নি। সংসদে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। ‘আমি বলব- রাজনীতিতে কখনই শূন্যতা বিরাজ করে না। সুতরাং অবিলম্বে একটা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। এই নির্বাচন দিলেই এই শূন্যতা থাকবে না। আপনারা যে ভয়ঙ্কর অবস্থায় আছেন তা থেকে মুক্তি পাবেন।’
মওদুদ বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ষড়যন্ত্র চলবে কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্র এখন পর্যন্ত সফল হয় নাই। এটা সম্ভবপর হবে না, কারণ গত ৫ বছরে লক্ষ লক্ষ মানুষ যে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাদের যে ক্ষতি হয়েছে। যে মা-বোনরা তাদের সন্তানদের হারিয়েছেন এবং ২৬ লক্ষ মামলা হয়েছে। এদের ওপর যেভাবে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে তারা কোনোদিনও জাতীয়তাবাদী দলকে ভুলতে পারবে না। মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন রেজিন খান, শাম্মী আখতার নিলুফা ইয়াসমিনসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Share this content: