আমেরিকালিড নিউজ

নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সমাবেশ কমিউনিটির নিরাপত্তা এবং দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

এবিএনএ: ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকায় নিরাপত্তার পাশাপাশি সিসিটিভির সংখ্যা বৃদ্ধি এবং দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে ২ ডিসেম্বর নিউইয়র্কে  বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে বাংলাদেশিরা। সমাবেশ থেকে নিউইয়র্কের পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয় ১৭ নভেম্বর এস্টোরিয়ায় বনফুল গ্রোসারিতে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ৪ জনের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করার জন্যে। অপর দু’জনকেও অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।

‘বাংলাদেশি আমেরিকান কম্যুনিটি অব নিউইয়র্ক’সহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পেশাজীবী-আঞ্চলিক সংগঠনের ব্যানারে জড়ো হওয়া এ সমাবেশের সূচনা বক্তব্যে কুইন্স ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার ও ইউএস সুপ্রিম কোর্টের এটর্নী মঈন চৌধুরী বলেন, কোন অপরাধ সংঘটিত হবার পর দুর্বৃত্ত গ্রেফতার হবার আগে এবং পরে ভিকটিম-পরিবারের উচিত হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করা। এছাড়া, প্রতিটি তারিখেই আদালতেও উপস্থিত থাকতে হবে। তাহলেই দৃর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। এটর্নী মঈন চৌধুরী এ সময় হতাশার সাথে উল্লেখ করেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের কমিউনিটির অনেক ভিকটিম-পরিবারই এ ধরনের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন না। আর তখোনই দুর্বৃত্তরা লঘু শাস্তি পেয়ে থাকে। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ এখন ডেমক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে। রাজ্য গভর্নরও ডেমক্র্যাট। তাই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন তৈরীর পুরনো দাবিটি এ রাজ্যে শীঘ্রই পূরণ হবে বলে আশা করছি।

কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট বদরুন্নাহার খান মিতা বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে সকলের উপস্থিতি প্রমাণ করছে কতটা উদ্বিগ্ন নিরাপত্তার ব্যাপারে। এখন থেকে সকল কর্মসূচিতে এই ঐক্য ধরে রাখতে হবে। তরুণরা জাগ্রত হলেই আমাদের দুশ্চিন্তা দূর হবে। কারণ, ওরা যতটা জোরালোভাবে প্রশাসনের সাথে লবি করতে পারবে, আমাদের পক্ষে ততটা সম্ভব হচ্ছে না।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, সেক্রেটারি রুহুল সিদ্দিকী, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, ডেমক্র্যাটিক পার্টির সংগঠক মোহাম্মদ মুিজবর রহমান এবং ফখরুল আলম, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম, আইনজীবী এন মজুমদার, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট এমাদ চৌধুরী, আজিমুর রহমান বোরহান, আহসান হাবিব, সানোয়ার হোসেন ছানু, আয়োজকদের অন্যতম মো. জাবেদউদ্দিন প্রমুখ।

১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় পুলিশ পরিচয়ে বনফুল রেস্টুরেন্টে ঢুকে পিস্তলের মুখে নগদ দু’হাজার ডলার লুট করে যাবার সময় এই গ্রোসারি মালিকের ভগ্নিপতি রাসেল আহমেদ (৩০) দুর্বৃত্তদের ধাওয়া করেন। সে সময় এক ডাকাতের গুলি রাসেলের বাম উরুতে বিদ্ধ হয়। দু’সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসার পর রাসেলকে বাসায় থেকে চিকিৎসা-অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন এলমহার্স্ট হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কারণ, বুলেটটি উরুর হাড়ে বিদ্ধ হয়ে মাংসপেশীতে ঢুকে পড়েছে।

এস্টোরিয়ায় বাংলাদেশি অধ্যুষিত ২৯-১১ ৩৬ এভিনিউতে বনফুল গ্রোসারিতে ডাকাতির দু’সপ্তাহ পর পুলিশ দুই দুর্বৃত্তকে গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছে। এরা হলো হানিবল আলী (৫৫) এবং লুইস জায়েস (২৫)। অপর দু’জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও পুলিশ উল্লেখ করেছে। পুলিশ আরও জানায়, আলী এবং জায়েস-সহ আরেক দুর্বৃত্ত গ্রোসারির ভেতরে ঢুকেছিল পুলিশ পরিচয়ে। ওরা পুলিশের নকল ব্যাজও প্রদর্শন করে। আরেকজন ছিল গ্রোসারির সামনে গাড়িতে। চারজনই ছিল মুখোশধারী।

গ্রেফতার দুই ডাকাতের বিরুদ্ধে ফার্স্ট এবং সেকেন্ড ডিগ্রি সশস্ত্র ছিনতাই এবং অস্ত্র বহনের সেকেন্ড ডিগ্রির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে। এসব অপরাধ প্রমাণিত হলে একেকজনের ২৫ বছর কারাদণ্ড হতে পারে বলে সরকারী আইনজীবীরা জানান। এ দু’জনকে ১২ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করা হবে।

Share this content:

Related Articles

Back to top button