
এবিএনএ: দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবনতি হয়েছে বলে ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। কোন কোন খাতে কীভাবে দুর্নীতি বেড়েছে সেটা ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝানোর দাবি জানিয়েছেন দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির প্রধান। মঙ্গলবার দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। দুর্নীতির সূচক নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন সম্পর্কে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানান দুদক চেয়ারম্যান।
মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বজুড়ে দুর্নীতির ধারণাসূচক (সিপিআই) ২০১৮-এর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টিআইবি। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। ১০০ পয়েন্টের মধ্যে ২৬ স্কোর পেয়ে আগের বছরের (২০১৭) তুলনায় চার ধাপ অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের। অর্থাৎ দেশে দুর্নীতির মাত্রা বেড়েছে।
টিআইবি প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘টিআইবি প্রতি বছরই দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে। আমরা ব্যাখ্যা চাই যে, কীভাবে এবং কী কী কারণে দুর্নীতি বেড়েছে। ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফিগার না দিলে সেই রিপোর্ট কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। উই ওয়ান্ট টু স্পেসিফিকেশন। মুখের কথায় নম্বর করা যায় না।’
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমরা টিআইবিকে আগেও বলেছি আপনাদের ম্যানলজি জানান, কাস্টমস অ্যান্ড ফিগার দেন। আমরা সবাই মিলে যদি চেষ্টা করি তাহলে দুর্নীতি দমন বা কমানো সম্ভব হবে।’ দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। শুধু ২০১৫ সালেই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে গতকাল একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। টাকা পাচারের এই প্রবাহকে ‘মহাসমুদ্র’ হিসেবে দেখছেন দুদক চেয়ারম্যান। এই ‘মহাসমুদ্রে’ কাউকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি। এজন্য এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইকবাল মাহমুদ। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) এর গবেষণা প্রতিবেদন সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অর্থপাচারের মহাসমুদ্রে কাকে খুঁজবো আমাদের কাছে যুক্তিসঙ্গত তথ্য দেওয়া হোক, তাহলে ব্যবস্থা নিতে পারবো।’
সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে নতুন আইনে দুদকের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে কি না এ সম্পর্কে টিআইবি যে প্রশ্ন তুলেছে সে ব্যাপারেও কথা বলেন চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘দুদকের স্বাধীনতা খর্ব করার মতো কোনো আইন সংসদে হয়নি। পার্লামেন্টে যে আইন করা হবে সে আইন চির ধার্য হিসেবে মানতে হবে। কারণ তারা জনগণের ম্যান্ডেন্ট নিয়ে পার্লামেন্টে বসেছে।’ দুদকের মামলায় জাহাল নামে এক ভুল আসামি কারাভোগ করছেন এমন তথ্য সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে। এ সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা একটা দুঃখজনক ঘটনা। আমি এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমরা যখন শুনেছি তখনই আইডেন্টিফাই করে জাহালকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেছি।’ দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাহালের বিষয়ে পরিচালকসহ চারজনকে হাইকোর্ট ডেকেছে। আমরা আদালতে যাবো, আদালত যা করে আমরা তা মেনে নেব। তবে এক্ষেত্রে ব্যাংক, পুলিশ ও এনআইডি কার্ড যারা আইডেন্টিফাই করেছে তাদের সবার ভুল রয়েছে।’
Share this content: