
এ বি এন এ : চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহনের জটিলতার আপাত অবসান ঘটল। আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের পর ধর্মঘট ৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছে প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
নির্ধারিত পরিমাণের অতিরিক্ত ওজন বহনে জরিমানার নিয়ম বাতিলসহ সাত দফা দাবিতে গত সোমবার প্রাইম মুভার-ট্রেইলার মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘটে যাওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট সৃষ্টি হয়েছিল।
তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন রবিবার থেকে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল।
এই পরিস্থিতিতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সচলের লক্ষ্যে ধর্মঘটীদের সঙ্গে শুক্রবার সকালে বৈঠকে বসেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার চৌধুরী।
প্রাইম মুভারগুলোতে ৪২ টন পর্যন্ত ওজন বহনের অনুমতি মেলার আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মাওলা।
মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়ির অতিরিক্ত চাপ কমাতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ গত ১৬ আগস্ট গাড়ি ভেদে পণ্য পরিবহনের ওজন নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে ১৪ চাকার প্রাইম মুভারকে সর্বোচ্চ ৩৩ টন পর্যন্ত মালামাল বহনের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
প্রাইম মুভার-ট্রেইলার মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের অভিযোগ, আকস্মিক এই সিদ্ধান্তের কারণে দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুতে তাদের যান আটকে জরিমানা করা হচ্ছিল। সেখানে তাদের মারধরও করা হয়।
তারা বলছেন, কনটেইনারের ওজনের বিষয়ে তাদের কিছু করার না থাকলেও প্রাইম মুভারে ৩৩ টনের পর প্রতি টনের জন্য তাদের দুই হাজার টাকা করে জরিমানা গুনতে হচ্ছে।
পুলিশ কমিশনার ৪২ টন পর্যন্ত ওজন বহনের অনুমতি পাওয়া ছাড়াও তার চেয়ে বেশি ওজন বহনের জরিমানা কনটেইনার মালিকদের কাছ থেকে আদায়ের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে গোলাম মাওলা জানান।
চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার-ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, “আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ৪ অক্টোবর আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। সেই পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।”
আন্তমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান মালিক-শ্রমিক নেতারা।
তাদের এই ধর্মঘটের ফলে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের ৪০ হাজার ২৫৯টি কনটেইনার জমে গিয়েছিল।
চট্টগ্রাম বন্দরে মোট কনটেইনার ধারণক্ষমতা ৩৬ হাজার ৩৫৭ টিইইউস (টোয়েন্টি ফুট ইকুইভেলেন্ট ইউনিট), ফলে অতিরিক্ত কনটেইনার নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল বন্দর কর্তৃপক্ষকে।
এই পরিস্থিতি উদ্বেগ জানিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে ধর্মঘট অবসানে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
Share this content: