জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

বগুড়ায় ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আ:লীগের সভাপতি ড.সিদ্দিকুর রহমান

এবিএনএ : যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড .সিদ্দিকুর রহমান ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কাযর্করি সদস্য সাহানারা রহমান বিশাল দলীয় কর্মী বাহীনি নিয়ে বগুড়া কেন্দ্রীয শহীদ মিনারে মহান ২১ ফেব্রুয়ারি ‘ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে ভাষাশহীদদের স্মরণে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করেন । এবং নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি

IMG_0328

বলেন…… বাঙালি জাতির জন্য এই দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার, অনদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। যে কোন জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার- মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদরা জাতিকে সে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন।

১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।

IMG_0281

তাদের এই আত্মদান নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সরদার ফজলুল করিম তার ‘বায়ান্নরও আগে’ প্রবন্ধে লিখেছেন ‘ বরকত সালামকে আমরা ভালবাসি। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা বরকত সালাম আমাদের ভালবাসে। ওরা আমাদের ভালবাসে বলেই ওদের জীবন দিয়ে আমাদের জীবন রক্ষা করেছে। ওরা আমাদের জীবনে অমৃতরসের স্পর্শ দিয়ে গেছে। সে রসে আমরা জনে জনে, প্রতিজনে এবং সমগ্রজনে সিক্ত। ’

এদের আত্মদানের মধ্যদিয়ে আমরা অমরতা পেয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা বলতে পারি দস্যুকে, বর্বরকে এবং দাম্ভিককে : তোমরা আর আমাদের মারতে পারবে না । কেননা বরকত সালাম রক্তের সমুদ্র মন্থন করে আমাদের জীবনে অমরতার স্পর্শ দিয়ে গেছেন।’বরেণ্য শিক্ষাবিদ আবুল ফজল একুশ নিয়ে তার এক লেখায় লিখেছেন ‘মাতৃভাষার দাবি স্বভাবের দাবি। ন্যায়ের দাবি, সত্যের দাবি- এ দাবির লড়াইয়ে একুশে ফেব্রুয়ারির শহীদরা প্রাণ দিয়েছেন। প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করেছেন, স্বভাবের ব্যাপারে, ন্যায় ও সত্যের ব্যাপারে কোন আপোষ চলেনা, চলেনা কোন গোঁজামিল । জীবন-মৃত্যুর ভ্রুকুটি উপেক্ষা করেই হতে হয় তার সম্মুখীন।

উল্লেখ্য, মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ ও শাসকগোষ্ঠির প্রভূসুলভ মনোভাবের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং ভাষার ভিত্তিতে বাঙালির জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।ভাষা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি সেদিন ‘মায়ের ভাষার’ মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পায় নব প্রেরণা। এরই পথ বেয়ে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ।

পরবর্তী নয় মাস পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে সংযোজিত হয় নতুন এক স্বাধীন সার্বভৌম দেশ- ‘বাংলাদেশ’।
এদিকে, মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৫ বছর পূর্ণ হবে আগামীকাল। একুশে ফেব্রুয়ারি শোকাবহ হলেও এর যে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় তা পৃথিবীর বুকে অনন্য। কারণ বিশ্বে এ যাবতকালে একমাত্র বাঙালি জাতিই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৯ সালে মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের হিসাবে পালন করেন। পরিশেষে তিনি বলেন
একুশ আমার লড়াইয়ের বর্ণমালা, রক্তের ফসল! আমার কাছে একুশ কোনো বিমূর্ত বিশ্বাস নয়, ইতিহাস থেকে স্মৃতিচারণও নয়! আমার কাছে একুশ প্রতিদিনের, প্রতিক্ষনের ৷

একুশের রক্তঝরা পথপরিক্রমণে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে শত্রু মুক্ত করেছি আর এই একুশের দীপ্ত শপথে বলীয়ান হযেই দেশ থেকে সন্ত্রাস, মৌলবাদ আর সাম্প্রদায়িকতা মুছে দেয়ার প্রয়াস নিয়েছি ৷ আমার কাছে বঙ্গবন্ধু আর একুশ–দুটোই সমার্থক শব্দ ৷ আজ এই প্রদোষে একুশের চেতনাকে উপজীব্য করে জাতীর জনকের সোনার বাংলা গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করছি এবং সেসাথে বঙ্গবন্ধুর সার্থক উত্তরাধিকার জননেত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থান ও ক্ষুধা মুক্ত নিরাপদ পৃথিবী বিনির্মানে একাত্মতা ঘোষণা করছি৷

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button